ডেস্ক রিপোর্টঃ ‘বাজেটের মুহিত, মুহিতের বাজেট’ একটা সময় বাংলাদেশে এটাই ছিল রেওয়াজ। কিন্তু আওয়ামী লীগের নতুন সরকার এবার ক্ষমতায় আসার পর বিদায় ঘণ্টা বাজে সিলেটের মুহিতের। অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব বর্তায় কুমিল্লার আ হ ম মুস্তফা কামালের ওপর। তাই দীর্ঘদিনের রেওয়াজ ভেঙে আসছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট দেবেন নতুন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
আগামী জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে (১৩ জুন) সংসদে দাঁড়িয়ে জীবনের প্রথম বাজেট দেবেন মুস্তফা কামাল। এরমধ্যে দিয়ে মুহিতের টানা ১০ বাজেটের পর দেশ ও সংসদ দেখবে এক নতুন অভিজ্ঞতা।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন অর্থমন্ত্রী বাজেটের চিরাচরিত কিছু প্রথা তুলে দিয়ে সংসদে বাজেট উপস্থাপনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বিশেষ করে বাজেট উপস্থাপনে তিনি আনবেন আমূল পরিবর্তন। এজন্য বাজেটের জটিল ইকোনমিক টার্মগুলোকে সহজবোধ্যভাবে উপস্থাপন করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পুরো বাজেট সহজ ও সরল ভাষায় প্রস্তুতের নির্দেশ দিয়েছেন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বাজেট এদেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের জন্য। আর তারাই যদি এটা বুঝতে না পারে তাহলে বাজেটর মহাত্মই থাকে কি করে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের বাজেট সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বুঝতে পারবে। সুতরাং তারাও বাজেটের ভালো-মন্দ বিষয়ে মন্তব্য করতে পারবে। এবারের বাজেট থেকেই দেশের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ বাজেট নিয়ে আগ্রহী হবে।
বাজেট উপস্থাপনের দিন প্রথম কি বলবেন তাও ইতোমধ্যে ঠিক করে রেখেছেন বলে জানান অর্থমন্ত্রী।
সূত্র জানায়, কয়েক দফা বৈঠকের পর অর্থমন্ত্রী এবারের বাজেটের সম্ভব্য আকার ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা নির্ধারণ করেছেন। এরমধ্যে ঘাটতি ধরা হয়েছে ১ লাখ ৪৫ হাজার থেকে দেড় লাখ কোটি টাকা। তবে শেষ মুহূর্তে এসে বাজেটের এ আকার ও ঘাটতি কিছুটা কাটছাঁট হতে পারে।
বাজেটে অর্থ যোগানের প্রধান উৎস হিসাবে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে রাজস্বকে সবোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। এজন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকের পর বাজেটে অর্থের যোগান হিসাবে সম্ভাব্য রাজস্ব আহরণের সম্ভব্য লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা নির্ধারণ করেছেন অর্থমন্ত্রী।
তবে শেষ মুহূর্তে এ লক্ষ্যমাত্রা কিছুটা কম-বেশি হতে পারে বলে জানায় অর্থমন্ত্রণালয়।
রাজস্ব আহরণে লক্ষ্যমাত্রার দিক থেকে সবার উপরে এগিয়ে রাখা হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর ((মূসক/ভ্যাট) খাতকে। খাতভিত্তিক রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে এ খাত থেকে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণের ছককষা হচ্ছে। কারণ আসছে বাজেট উপস্থাপনের দিনথেকেই বাস্তবায়ন হতে চলেছে নতুন তিন স্তরের ভ্যাট আইন।
অর্থমন্ত্রী মনে করেন নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন ও সঠিক হারে স্বচ্ছ্বতার সঙ্গে ভ্যাট আদায় হলে এ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়বে।
এরপরই রাজস্ব আহরণে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে প্রত্যক্ষ আয়কর খাতকে। এ খাতেও বাজেটে ব্যাপক সংস্কার আনতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী। সংস্কারের প্রদান লক্ষ্য হবে কর প্রদানে সক্ষম দেশের সব নাগরিককে প্রত্যক্ষ আয়করের জালের আওতায় নিয়ে আসা।
তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ খাতে হিসেবে রাজস্ব আহরণে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে আমদানি ও রফতানি শুল্ক খাতকে। এ খাতকে কম গুরুত্ব দেয়ার কারণ হলো আসছে বাজেটে বেশকিছু রফতানি খাতে প্রণোদনা দিতে যাচ্ছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রনালয় সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব বাবদ আয় বাদ দিয়ে বাজেটের বাকি অর্থকেই ঘাটতি হিসাবে ধরা হয়েছে। বাজেট ঘাটতি পূরণেও অর্থের যোগানের মাধ্যম হিসেবে বিদেশি ঋণ, অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ ও সঞ্চয়পত্র বিক্রি থেকে প্রাপ্ত অর্থকে ধরেছেন অর্থমন্ত্রী।
তবে কোন খাত থেকে কত যোগান ধরবেন তা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। আসছে বাজেটে এডিপির আকার হবে প্রায় ১ লাখ ৯৮ হাজার ৪০ কোটি টাকা।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com