জে এইচ বাবুঃ মুসলমানদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় উৎসব আসন্ন ঈদুল ফিৎরের বাকী আরো এক সপ্তাহ। এদিকে আসন্ন ঈদুল ফিৎরের অযুহাত দেখিয়ে কুমিল্লা-বুড়িচং-ব্রাহ্মনপাড়া-মিরপুর এমএ গনি সড়কে সিএনজি ভাড়া দ্বিগুন গুনতে হচ্ছে যাত্রীদের। এতে করে ওই সড়কে চলাচলরত সাধারণ যাত্রীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে।
এমনিতে রোদ বৃষ্টি-ঝড়-তুফান কুয়াশা ও সন্ধ্যার পরে ভাড়া বেড়ে যাওয়া নিত্য দিনের রেওয়াজ। তবে বছরজুড়ে একটা প্রথা চালু করেছেন সিএনজি চালিত অটোরিক্সা চালকরা। তা হলো ঈদ, বছরে দুটি ঈদকে সামনে রেখে ভাড়া বেশি বৃদ্ধি করে ফেলে সিএনজি মালিক ও চালক সমিতির লোকজন। এসময় ভাড়া বেশি দিয়ে যাত্রীদের চলাচল করতে এক প্রকার বাধ্য করে সিএনজির চালকেরা।
এদিকে সন্ধ্যার পর বিকল্প যানবাহন না থাকায় যাত্রীদের দিতে হয় তিনগুন ভাড়া। আর চালকদেও পছন্দমতো ভাড়া না হলে একচুল পরিমান নড়বেন না। প্রয়োজনে রাত গড়িয়ে সকাল হবে তবুও তারা পছন্দসই ভাড়া না হলে বাহনে চাবি স্পর্শ করাবেন না। এ নিয়ে সড়কটি চলাচলরত হাজারো সাধারণ যাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি সংবাদ প্রকাশের পর শাসনগাছা সিএনজি স্টেশনে ভাড়ার সাইবোর্ড টানান প্রশাসন। কিন্তু মাস না যেতেই উধাও হয়ে যায় প্রশাসনের টানানো সাইবোর্ড।
কুমিল্লা শাসনগাছা সিএনজি স্ট্যান্ডে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায় যে, কুমিল্লা-বুড়িচং-ব্রাহ্মনপাড়া-মিরপুর এমএ গনি সড়কে চলাচলরত সিএনজি অটোরিক্সা চালকরা ঈদের অযুহাতে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। কুমিল্লা থেকে বুড়িচং ভাড়া ৩০ টাকার স্থলে ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তা ৫০-৬০ টাকা করে নেয়া হয়। কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মনপাড়া ভাড়া ৫০ টাকা স্থলে ৬০ টাকা থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে তা ৮০-৯০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে। এতে করে সিএনজির চালকদের কাছে জিম্মি হয়ে আছে সাধারন যাত্রীরা। বেলা বাড়ার সাথে সাথে সিএনজি ভাড়াও বাড়তে থাকে। কুমিল্লা থেকে বুড়িচংয়ের দুরত্ব হলো মাত্র ১২ কিলোমিটার। আর এই স্থানের মধ্যে সিএনজির চালকরা সিন্ডিকের মাধ্যমেই ভাড়া বৃদ্ধি করে থাকে। তারা সন্ধ্যার পর থেকে ভাড়া বেশি দিতে চাপ প্রয়োগ করেন যাত্রীদের উপর। সিএনজি ব্যাতিত অন্য কোন পরিবহন না থাকায় যাত্রীরা বেশি ভাড়া দিতে বাধ্য হচ্ছে। প্রশাসনের নজরদারী না থাকায় সিএনজির চালকেরা যাত্রীদের উপর বেশি ভাড়া আদায় করছে।
কুমিল্লা থেকে বুড়িচংয়ে সিএনজি যোগে আসা রফিক নামে এক যাত্রী জানান, সাধারণ সময়ে দিনের বেলা কুমিল্লা থেকে বুড়িচংয়ের ভাড়া ৩০ টাকা। কিন্তু ঈদের অযুহাত দেখিয়ে তা ৫০ টাকা রাখা হয়েছে। এছাড়া সন্ধ্যা হলেই ৩০টাকার ভাড়া দিতে হয় ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ভাড়া দেই। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমি হলফ করে বলতে পারি বাংলাদেশে আর কোন সড়কে এত বেশী ভাড়া আদায় করা হয় না, যা শাসনগাছা থেকে বুড়িচং-ব্রাহ্মনপাড়া টু মিরপুর সড়কে দিতে হয়।
সন্ধ্যার পরে শাসনগাছা থেকে তিন কিলোমিটার দূরে পালপাড়া, পাঁচ কিলোমিটার দূরে কালখড়পাড় এবং ছয় কিলোমিটার ভরাসার বাজারে যেতে হলে ৩০ টাকা ভাড়া গুনতে হয় যাত্রীদের। পুলিশ সদস্য কামাল হোসেন জানান, আমি সপ্তাহে ৩/৪ বার বুড়িচং-কুমিল্লা যাওয়া আসা করি, মাগরিবের আজানের পরেই ৫০ টাকা করে ভাড়া নেয়া হয়। শুক্রবারে বিকেলে বুড়িচং থেকে কুমিল্লা ৪০/৫০টাকা। ঈদ উপলক্ষে দিনের বেলাই ভাড়া ৫০ টাকা করা হয়েছে। ঈদের বাকী আরো কয়েক দিন, তবে ঈদের সময় ভাড়া ১০০ টাকা হবে মনে হচ্ছে।
এ বিষয়ে বুড়িচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরুল হাসান মোবাইল ফোনে জানান, ভাড়া বেশি নেয়ার অভিযোগে কয়েকবার অভিযান চালিয়ে চালকদের জরিমানা করেছি। ঈদে কোন প্রকার ভাড়া বৃদ্ধির অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com