ডেস্ক রিপোর্টঃ রাজনৈতিকভাবে কুমিল্লা জেলা দুটি ভাগে বিভক্ত। সংগঠনকে গতিশীল করতে প্রায় ২৮ বছর আগে ভাগ হয় কুমিল্লা জেলা। তৎকালীন ১৬টি উপজেলাকে দুই ভাগে ভাগ করে পৃথক দুই রাজনৈতিক জেলা গড়ে ওঠে।
সাতটি উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা উত্তর জেলা এবং আগের ৯টি এবং বর্তমান লালমাইসহ ১০টি উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা। দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয় কুমিল্লা জেলা সদরে আর উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম পরিচালিত হয় চান্দিনা উপজেলা সদরে।
রাজনৈতিক জেলা হিসেবে কুমিল্লা উত্তর জেলায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সকল অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পৃথক কমিটি থাকলেও তাদের নেই কোনো নিজস্ব কার্যালয়। ১৯৯২ সালে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যক্রম শুরু হলেও দীর্ঘ প্রায় ২৮ বছরে আজও গড়ে ওঠেনি দলের রাজনৈতিক কোনো কার্যালয়।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় সাত-আট বছর চান্দিনা উপজেলা আওয়ামী লীগের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংগঠনটির কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এরপর থেকে প্রায় ২০ বছর ধরে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ এমপি প্রতিষ্ঠিত চান্দিনা মহিলা ডিগ্রি কলেজ মিলনায়তনই হচ্ছে তাঁদের একমাত্র ভরসা। ওই কলেজেই চলে তাদের রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ।
এদিকে, কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কার্যক্রম শুরু হওয়ার পর থেকে চারবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। এতে অনেক রাজনৈতিক নেতার ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয় গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন নেতৃবৃন্দ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতা বলেন, সংগঠন নামে আছে, কাজে নেই। বছরে দুই-চারটি বর্ধিতসভা ছাড়া আর কোনো কার্যক্রম নেই কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের। কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভা-সমাবেশে একটি ব্যানার করার ন্যূনতম প্রয়োজনও বোধ করেন না কেউ। এমনকি চান্দিনা উপজেলা সদরে কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কোনো সাইন বোর্ড পর্যন্ত নেই।
দলীয় কর্মসূচির ব্যাপারে তিনি তীব্র ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী, জাতীয় শোক দিবস, বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন থেকে শুরু করে দলের বা সংগঠনের কোনো কর্মসূচি পালন করছে না কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল আওয়াল সরকার বলেন, আমাদের কোনো কার্যালয় না থাকার পেছনে আমরা নিজেরাই দায়ী। কারণ কুমিল্লা উত্তর জেলার সাতটি উপজেলার মধ্যে পাঁচটি সংসদীয় আসনে পাঁচজন সংসদ সদস্য রয়েছেন। যাঁরাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হচ্ছেন তাঁরা সবাই নিজের ও পরিবারের চিন্তা নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। সংগঠনটির জন্য কারও কোনো উদ্যোগ নেই। আমরা সবসময় চাই এমপিদের সঙ্গে নিয়ে সংগঠনটি এগিয়ে নিতে। কিন্তু সেখানে কারও কোনো সহযোগিতা পাচ্ছি না।
উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের কোনো কর্মসূচি পালনের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে প্রতিটি উপজেলায়ই ওইসব কর্মসূচি পালন করা হয়। কেন উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ কর্মসূচি পালন করে না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত যার যার এলাকা নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে জেলার কর্মসূচি পালিত হয় না।
কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের অধীনে রয়েছে চান্দিনা, দেবীদ্বার, মুরাদনগর, হোমনা, তিতাস, মেঘনা ও দাউদকান্দি উপজেলা এবং দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ-এর অধীনে কুমিল্লা আদর্শ সদর, সদর দক্ষিণ, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া, নাঙ্গলকোট, বরুড়া, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, চৌদ্দগ্রাম এবং নব গঠিত লালমাই উপজেলা।
সূত্রঃ কালের কণ্ঠ
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com