ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কাজিয়াতল দক্ষিণপাড়া ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। শিক্ষক-কর্মচারীরা তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ করেছেন ব্যবস্থাপনা কমিটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। এ বিষয়ে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলে তিনি জবাব না দিয়ে প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে ২০ দিন যাবৎ উধাও রয়েছেন বলে জানা গেছে। এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী মুরাদনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন।
উন্নয়ন তহবিলের অর্থ আত্মসাৎ, নিয়মিত মাদ্রাসায় না এসে হাজিরাখাতায় সই করা ইত্যাদি অভিযোগে সংশ্লিষ্ট দফতরে মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন স্থানীয় অভিভাবকরা। ১৯ অক্টোবর মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় মোস্তাফিজুর রহমানের প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, নগদ অর্থ নিয়ে পলাতক থাকাসহ, বিভিন্ন অনিয়ম ও অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি উঠে আসে। সভায় মাদ্রাসার কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে মোস্তাফিজুর রহমানকে সাময়িক অপসারণ, সহ-সুপার আবদুল হাফিজকে ভারপ্রাপ্ত সুপারের দায়িত্ব দেওয়া হয়। অভিযোগ মাথায় নিয়ে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকায় অভিভাবকমহল ও স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
অভিযুক্ত মোস্তাফিজুর রহমান উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানাধীন পূর্বধইর পশ্চিম ইউনিয়নের নবীয়াবাদ গ্রামের মৃত রউফ মিয়ার ছেলে।
মাদ্রাসা শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘সুপারের নানা অনিয়ম ও অসদাচরণে অতিষ্ঠ হয়ে আমরা ১২ জন শিক্ষক-কর্মচারী ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে লিখিত অভিযোগ দিই। তিনি ব্যবস্থাপনা কমিটিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখান। আমরা নিরুপায় হয়ে পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দায়ের করি। এছাড়াও তিনি ‘হিলফুল ফুযুল শিশু সদন কমপ্লেক্স’ নামে একটি এতিমখানার নাম ব্যবহার করে ৩৫ জন শিক্ষকের সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। প্রকৃতপক্ষে ওই নামে কোনও এতিমখানা মুরাদনগরে নেই।’
মাদ্রাসা ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি শরিফুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘অভিযুক্ত মাদ্রাসা সুপার মোস্তাফিজুর রহমান দীর্ঘদিন যাবৎ উন্নয়ন তহবিলের সঠিক হিসাব দিতে পারেননি। তাছাড়া তিনি সপ্তাহে দুদিন মাদ্রাসায় এসে বাকি চার দিনের স্বাক্ষর করতেন। শুধু তাই নয়, অধীনস্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে তিনি দুর্ব্যবহার করেন। যা একজন শিক্ষকের নৈতিক আদর্শের পরিপন্থী। ব্যবস্থাপনা কমিটি একাধিক সভায় তাকে মৌখিকভাবে নিজেকে শোধরানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন। দিন দিন অনিয়মের মাত্রা বাড়িয়ে দিলে তাকে একাধিকবার শোকজ করা হয়। শোকজের জবাব না দিয়ে উল্টো মাদ্রাসার গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও টাকা নিয়ে ২০ দিন যাবৎ উধাও হয়ে যান। ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি রিসিভ করেননি। নিরুপায় হয়ে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমি মুরাদনগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।’
অভিযোগগুলোর বিষয়ে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে মোস্তাফিজুর রহমান সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে লাইন কেটে দেন।
মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ বলেন, ‘মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে করা অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সংশ্লিষ্ট দফতরকে দায়িত্ব দিয়েছি।’
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com