ডেস্ক রিপোর্টঃ নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লার লাইব্রেরিয়ান মো. খাইরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বিনা ছুটিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা, যাথাসময়ে কর্মস্থলে না থাকা, কর্মস্থলে থেকে দায়িত্ব অবহেলা, পাঠকদের সাথে ব্যক্তিগত বিষয় বিনিময় করা, পাঠককে ফেসবুকে লাইক, কমেন্টের জন্য মানসিক চাপ সৃষ্টি করাসহ বহু অভিযোগ তার বিরুদ্ধে। তবে এসব অভিযোগের বিরুদ্ধে নিজের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেছেন লাইব্রেরিয়ান।
অনিয়মের কারণে গত বছর ২১ অক্টোবর সাময়িক বরখাস্ত হয়েছেন তিনি। ইনস্টিটিউটের একাধিক কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন কারণে বারবার বদলি হওয়ার পরও তার স্বভাবের কোন পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন সহকর্মীরা। গত ২৭ নভেম্বর বেলা ১২টা থেকে ২ ডিসেম্বর বেলা ১১.৩০ পর্যন্ত বিনা ছুটিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
পুলিশ লাইন এলাকার বাসিদ্ধা সায়মা আক্তার শিখা জানান, পাঠাগারে যাই বই পড়তে। তিনি স্বরচিত কবিতা পাঠ করে শুনান। নিজের গল্প বলেন। মানুষ তো বিরক্ত হয়। কমনসেন্সহীন ব্যক্তি কীভাবে সরকারি চাকুরি করে?
একজন নজরুল গবেষক জানান, পূর্বে এ পাঠাগারে নিয়মিত পড়ার জন্য যেতাম, এখন যেতেই মন চায় না। কেউ যদি পাঠাগারে যায়, সেই বুঝবে কেন মন চায় না। আমি মন্তব্য করবো না।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ভিক্টোরিয়া কলেজের একজন ছাত্রী জানান, তিনি পাঠাগারে গেলে অপ্রসঙ্গিক কথা বেশী বলেন। ফেসবুক আইডি বিনিময় করার জন্য বলেন। ফেসবুকে লাইক, কমেন্ড করার জন্য বারবার ম্যাসেজ দেন।
অভিযুক্ত লাইব্রেরিয়ান মো. খাইরুল ইসলাম বলেন, এখানে রাত্রি যাপন করি। ২৪ ঘণ্টা অফিসেই থাকি। ঠিক মতো দায়িত্ব পালন করি, সকল অভিযোগ মিথ্যা। পাঠকদের স্বাক্ষরলিপি দেখিয়ে এ কর্মকর্তা আরো বলেন, লাইব্রেরির পাশে নজরুল মিউজিয়াম রয়েছে। অনেক দর্শনার্থী এসে সেটা বন্ধ পায়, তারা আমার খাতায় লিখিত অভিযোগ করে গেছে। ফেসবুকে পাঠকদের হয়রানির বিষয়ে তিনি বলেন, যারা খুব কাছেন মানুষ সে সকল পাঠকে ফেসবুক বন্ধু হিসাবে নেই। এটা আমার ব্যক্তিগত বিষয়। যারা আমার ভক্ত তারা আমার কবিতা শুনতে চায়। কর্মস্থলে থেকেও দায়িত্ব পালন না করার বিষয়ে এ কর্মকর্তা বলেন, সব সময় পাঠক থাকে না। উপরে বেড রুম আছে সেখানে থাকি। টিভির রুমে, পত্রিকার রুমে থাকি। নিজের কাজ থাকলে একটু বাহিরে যাই। পাঠক থাকলে বাহিরে যাই না।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র কুমিল্লা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আল আমিন জানান, তিনি গত মাসের ২৭ তারিখ দুপুর থেকে আজ সকাল (২ ডিসেম্বর) পর্যন্ত কর্মস্থলে অনুপস্থিত ছিলেন। ছুটির বিষয়ে তার আবেদন আমার নিকট আসেনি।
সূত্র জানায়, ইতোপূর্বে এ প্রতিষ্ঠানের কয়েকটি কেন্দ্র থেকে নানা অভিযোগ নিয়ে বদলি হয়েছেন এ কর্মকর্তা।
এ বিষয়ে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. আবু ফজল মীর বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। অভিযোগের সত্যতা পেলে, যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট সচিব আব্দুর রহিম বলেন , এ লাইব্রেরিয়ানের বিরুদ্ধে পূর্বেও অভিযোগ ছিলো। গত বছর সাময়িক বরখাস্ত করা হয়ে ছিলো। এ ধরণের যে কোন অভিযোগ পেলে সরকারি আইনানু ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একজন সরকারি কর্মচারি এ ধরণের অনিয়ম করতে পারে না।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট উপ-পরিচালক শেখ রেজাউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, সরকারি অফিসে কর্মকর্তা-কর্মচারির রাত্রী যাপনের সুযোগ নেই। যদি কেউ থাকে লিখিত ভাবে অনুমোদন নিতে হবে।
কবি নজরুল ইনস্টিটিউট নির্বাহী পরিচালক মো. আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা বলেন, সরকারি চাকুরিতে মৌখিক ছুটির কোন বিধান নেই। নির্ধারিত ফরমে আবেদনের মাধ্যমে ছুটি নিতে হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com