ডেস্ক রিপোর্টঃ কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের চার লেনের কাজে ধীরগতিতে ক্ষুব্ধ সবাই। দেশের তিন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী অর্থমন্ত্রী, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ও এলজিআরডি মন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকায় এ মহাসড়ক। সবার প্রশ্ন, এ মহাসড়কের কাজের কচ্ছপগতির কারণ কী? কবে শেষ হবে মহাসড়কের কাজ, কবে লাঘব হবে মানুষের দুর্ভোগ?
বৃহস্পতিবার রাজধানীর এনইসি সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত ‘মহাসড়কের আয়ুষ্কাল : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রাস্তার খারাপ অবস্থার কারণে নিজের এলাকায় যেতে লজ্জা লাগে। সড়কের বেহাল অবস্থার জন্য লজ্জায় গাড়ির গ্লাস তুলে রাখতে হয়, নামানো যায় না। দ্রুতও যাওয়া যায় না, রাস্তা খারাপ। মানুষ গালি দেয়।’ এদিকে সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘নির্মাণকাজে ধুলা ওড়াটাই স্বাভাবিক। আমি উনাকে (অর্থমন্ত্রী) বলেছি, ওই রাস্তাটি (কুমিল্লা-নোয়াখালী) ফোর লেন হচ্ছে। কনস্ট্রাকশন ওয়ার্কে তো ধুলাবালি উড়বেই। তাই হয়তো উনি বাড়ি যেতে বারবার বিরক্ত হচ্ছেন। আন্ডার কনস্ট্রাকশন রোডে যা হয়, তা সেখানেও ঘটেছে।’ কাজের ধীরগতি আর ভাঙা রাস্তার কারণে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক এখন ‘জাতীয় ইস্যু’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সূত্রমতে, প্রকল্প শুরুর এক বছর পর লাকসাম থেকে লালমাই পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার এলাকার টেন্ডার হয় গত নভেম্বরে। এখন টেন্ডার ওপেন হবে। লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাস ও লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজার এলাকার বাইপাসের এখনো জমি অধিগ্রহণ বাকি। এ দুই বাজারে বেশি যানজট হয়।
এতে যাত্রী ও ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি বাড়ছে। ধুলাবালি আর ভাঙা রাস্তার দুর্ভোগে পড়ছেন লাখো যাত্রী। কুমিল্লা সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, নগরীর টমছম ব্রিজ থেকে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ পর্যন্ত ৫৯ কিলোমিটার চার লেন উন্নীতকরণের কাজ চলছে। কাজ শেষ হলে কুমিল্লা, চাঁদপুর, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর জেলাসহ সারা দেশের মানুষ উপকৃত হবে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে শুরু হওয়া কাজ আগামী জুনে শেষ হওয়ার কথা। কাজের ধীরগতিতে তা ২০২১ সালে শেষ হবে কিনা সন্দেহ। বাগমারা বাজারের ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘এ বাজারের সড়ক অনেক সরু। প্রতিদিন এখানে যানজট লাগছে। এতে পরিবহনের যাত্রী ও বাজারের ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগে পড়ছেন।’
লাকসাম দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মুজিবুর রহমান দুলাল বলেন, ‘লাকসাম দৌলতগঞ্জ বাজার বাইপাসে ও বাগমারা বাজার এলাকায় প্রতিদিনই যানজট হচ্ছে। এতে যাত্রী ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।’ এ রুটে চলাচলকারী উপকূল বাস সার্ভিসের পরিচালক অধ্যাপক কবির আহমেদ বলেন, ‘ভাঙা রাস্তার কারণে প্রতিদিন গাড়ি নষ্ট হচ্ছে। যা রোজগার করি তা গাড়ি মেরামতে চলে যায়। কাজের যে ধীরগতি এই দুর্ভোগ কবে শেষ হবে জানি না।’
কুমিল্লা জেলা মোটর অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, ‘যাত্রী, পরিবহন চালক ও মালিকদের ভোগান্তি রোধে দ্রুত ফোর লেনের কাজ শেষ করার দাবি জানাচ্ছি। ফোর লেনের কাজ শেষ করার আগে সড়কের সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী রাখাও দরকার।’ সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আহাদ উল্লাহ বলেন, ‘কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ফোর লেন প্রকল্পের ১৭ কিলোমিটার এলাকার টেন্ডার চলতি সপ্তাহে ওপেন করা হবে। ভূমি অধিগ্রহণ করে আমরা কাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করছি।’
সূত্রঃ বিডিপ্রতিদিন
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com