ডেস্ক রিপোর্টঃ নতুন বছরে ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত কুমিল্লায় আলোচিত ৬টি খু'নের ঘটনা ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় প্রতিটি ঘটনা সংগঠিত হওয়ার অল্প সময়ের মধ্যে খু'নের শিকার ব্যক্তিদের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। আর প্রতিটি খু'নের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থানাগুলোতে মামলাও হয়েছে।
এদিকে, থানা পুলিশের পাশাপাশি প্রতিটি খুনের রহস্য উদঘাটন এবং জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য মাঠে কাজ করছে সিআইডি, পিবিআই, ডিবিসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একাধিক টিম। তবে এসব খু'নের ঘটনায় জড়িত ঘাতকরা এখনো রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে।
জেলা পুলিশের কর্মকর্তারা বলছেন, খুব শিগগিরই এসব ঘটনায় জড়িত আসামিদের গ্রেফতার এবং ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করতে সক্ষম হবেন তারা। তবে আশ্চর্যজনক হলেও বাস্তবতা হচ্ছে আলোচিত এই ৫টি খু'নের ঘটনার মামলার আসামিরাই অজ্ঞাত।
সর্বশেষ, ১৬ জানুয়ারি ভোররাত ২টার দিকে বরুড়া উপজেলার আড্ডায় পল্লী বিদ্যুতের অভিযোগ কেন্দ্রের ইনচার্জ শরীফুল ইসলামকে কু'পিয়ে হ'ত্যা করেছে দু'র্বৃত্তরা।
মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে জেলার বরুড়া উপজেলার খোশবাস উত্তর ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের একটি টমেটো ক্ষেতের মধ্যে পাওয়া যায় আমেনা আক্তার (২৫) নামে এক নারীর মরদেহ। আমেনা ওই গ্রামের কৃষক মাজেদ মিয়ার মেয়ে। এ ঘটনায় বুধবার (১৫ নভেম্বর) তার বাবা মাজেদ মিয়া অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে বরুড়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা ওই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িতদের এখনো শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
পুলিশ, স্থানীয় সূত্র এবং খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন বছরের প্রথম দিন বুধবার (১ জানুয়ারি) জেলার আদর্শ সদর উপজেলার পালপাড়া ব্রিজের নিচ থেকে নগরীর বিষ্ণপুর (মুন্সেফ কোয়ার্টার) এলাকার ডা. লিয়াকত আলীর ছেলে সাবাত হোসেনের (২৮) মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ। উদ্ধারের সময় দেখা যায় মরদেহের হাতে স্কচ টেপ প্যাঁচানো রয়েছে। সাবাত ঘটনার দুই দিন আগে থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
এ ঘটনায় কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ারুল হক জানান, সাবাতকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর হাতে স্কচ টেপ প্যাঁচিয়ে মরদেহ নদীতে ফেলা হয়ে থাকতে পারে। তবে এ ঘটনায় মামলা হলেও ঘাতকরা এখনো অধরা রয়েছে।
গত ৯ জানুয়ারি বিকেলে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার মোস্তফাপুর এলাকা থেকে মুরাদনগর উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও জেলা পরিষদ সদস্য খায়রুল আলম সাধনের মরদেহ উদ্ধার করে সদর দক্ষিণ থানা পুলিশ। নিহতের শরীরে, মুখে ও গলায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পুলিশের ধারণা তাকে অন্যত্র হত্যার পর এই স্থানে মরদেহ ফেলা হয়। তবে এই ঘটনায় মামলা হলেও খুনের রহস্য এখনো বের হয়নি।
এদিকে, নিখোঁজের ৬ দিন পর গত ১১ জানুয়ারি শনিবার রাতে জেলার লালমাই উপজেলার বেলঘর দক্ষিণ ইউনিয়নের পালপাড়া এলাকায় প্রবাসী জুয়েল রানার শিশু ছেলে আবু সুফিয়ান সানির (৬) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলেও হত্যার কারণ ও খুনিরা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।
অপরদিকে, গত ১৩ জানুয়ারি সোমবার সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার নাওতলা থেকে নৈশপ্রহরী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. নাছির উদ্দিনের (২৬) ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই হত্যার রহস্য এবং খুনিদের বিষয়টি এখনো অজানাই রয়ে গেছে।
কুমিল্লা ডিএসবির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আজিম উল আহসান জানান, কুমিল্লা জেলায় অতীতের তুলনায় বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অনেক স্ট্রং। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের গ্রেফতারের জন্য ব্যাপক কাজ করাসহ তদন্ত অব্যাহত রেখেছেন পুলিশের সদস্যরা। কুমিল্লা জেলার উত্তর এবং দক্ষিণের জন্য দুইজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রয়েছেন। তারাও সার্বক্ষণিক এই বিষয়গুলো মনিটরিং করছেন। আশা করা যাচ্ছে খুব শিগগিরই এসব হত্যার রহস্য উন্মোচিত হবে।
সূত্রঃ পূর্বপশ্চিমবিডি
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com