লাকসাম প্রতিনিধিঃ কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার আজগরা ইউনিয়নের বাতাবাড়িয়া গ্রামে পোল্ট্রি খামারের তীব্র দুর্গন্ধে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পার্শ্ববর্তী খালে খামারের বর্জ্য, মুরগির বিষ্ঠা ও মৃত মুরগি ফেলার কারণে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ভুক্তভোগীরা। জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন বাতাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক বছর আগে বাতাবাড়িয়া গ্রামের প্রবেশ মুখে ডাকাতিয়া নদীর পাড়ে বৃহৎ পরিসরের এ পোল্ট্রি খামারটি স্থাপন করেন খোকন পোদ্দার নামের লাকসামের এক ব্যবসায়ী। খামারের আশপাশে শতাধিক পরিবারের সহ¯্রাধিক মানুষের বসবাস। পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া রাস্তা দিয়ে আশপাশের কয়েক গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচল। প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী দুটি খালে পোল্ট্রি খামারের বর্জ্য, মুরগির বিষ্ঠা ও মৃত মুরগি ফেলার কারণে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। ফলে আশপাশের বাসিন্দা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী সহ পথচারীদের দুর্ভোগের সীমা থাকে না। দুর্গন্ধের মধ্যেই বসবাস ও চলাচল করতে হয় তাদের।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে ডাকাতিয়ার পাড়ে বৃহৎ পরিসরে খোকন পোদ্দারের পোল্ট্রি খামার। পশ্চিম পাশের ডাকাতিয়া ও উত্তর পাশের সংযোগ খালে ফেলা হয়েছে খামারের বর্জ্য। খালপাড়ে সারি সারি স্তুপ করে রাখা হয়েছে মুরগির বিষ্ঠা। খালের পানিতে ফেলা হয়েছে মৃত মুরগি। আশপাশে শতাধিক পরিবারের সহ¯্রাধিক মানুষের বসতি। গ্রামের বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষ্ঠার দুর্গন্ধে থাকা যায় না। দক্ষিণা বাতাসে গন্ধ বেশি ছড়িয়ে পড়ে। বিষ্ঠার দুর্গন্ধে তৃপ্তি নিয়ে খাওয়াদাওয়া করা যায় না। ঘুমাতেও কষ্ট হয়। রিকশা চালক মনির হোসেন ও পথচারী রিয়াদ হোসেন বলেন, প্রতিদিন খামার সংলগ্ন এলাকা দিয়ে যাতায়াতকালে নাক চেপে যেতে হয়।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, পোল্ট্রি বর্জ্যরে কণা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে ঢুকে ফুসফুস রোগের কারণ হতে পারে। এর থেকে শ্বাসকষ্ট এবং হার্টের ক্ষতি হওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। এ ধরণের খামার সংলগ্ন এলাকার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে থাকে।
খামার থেকে দুর্গন্ধ ছড়ানো, খালে বর্জ্য, বিষ্ঠা ও মৃত মুরগি ফেলার বিষয়টি অস্বীকার করে খামারের মালিক খোকন পোদ্দার বলেন, গন্ধ যাতে খামারের বাইরে না যায়, সে ব্যবস্থা আমাদের নেওয়া আছে। পরিবেশ দূষণের বিষয়ে আমরা সচেতন। আমরা নির্দীষ্ট গর্তে বর্জ্য-বিষ্ঠা ফেলি। এসময় কিছুটা গন্ধ ছড়াতে পারে। আর খালে মৃত মুরগি ফেলার বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যা।
আজগরা ইউপি চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন বলেন, বাতাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দারা আমাকে তাদের দুর্ভোগের বিষয়টি অবগত করেছেন। খামার কর্তৃপক্ষ আমাদের ইউনিয়ন পরিষদ থেকে কোনো প্রকার অনুমোদন কিংবা ট্রেড লাইসেন্স নেয়নি। জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আমি বেশ কয়েকবার তাদেরকে জনবসতিপূর্ণ এলাকা থেকে খামার অপসারণের অনুরোধ করেছি। তারা তা তোয়াক্কা করছেন না।
ভুক্তভোগী এলাকার বাসিন্দাদের প্রত্যাশা, খামার এলাকা পরিদর্শন করে জনদুর্ভোগ লাঘবে শীঘ্রই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন উপজেলা প্রশাসন।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com