প্রধানমন্ত্রীর আহবানে সাড়া দিয়ে মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থেকেও অর্থিক ও খাদ্যসহায়তা নিয়ে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় অসহায়, দরিদ্র ও কর্মহীন মানুষদের পাশে দাঁড়ালেন ব্রাহ্মণপাড়ার আমেরিকা প্রবাসী শিক্ষানুরাগী মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী। তিনি আমেরিকার নিউইয়র্কে কঠোর পরিশ্রম করে সব সময় দেশের মানুষের মঙ্গলে কাজ করে আসছেন। বর্তমানে আমেরিকায় লকডাউনের জন্য তিনি গত ২ মাস যাবত ঘরবন্দী আছেন। করোনা সংক্রমণ মহামারী পরিস্থিতে কোনো কর্ম না থাকা সত্তেও তিনি নিজে কষ্ট ভুলে গিয়ে মনে রেখেছেন মাতৃভূমির কথা, গ্রামের অসহায় মানুষদের কথা।
তিনি নিজস্ব অর্থায়নে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার কলেজ পাড়া ও ধান্যদৌল, কল্পবাস, নোয়াপাড়া এবং বুড়িচং উপজেলার কয়েকটি এলাকায়সহ বিভিন্ন গ্রামে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কর্মহীন, গরীব ও অসহায় পরিবাররের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করিয়েছেন।
মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরীর পক্ষ থেকে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেন ধান্যদৌল আবদুর রাজ্জাক খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাকির হোসেন, চান্দলা মডেল স্কুলের প্রধান শিক্ষক অপু খান চৌধুরী, মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের একাউন্টেন মানিক মিয়া ও দুদু মিয়া।
মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী এলাকায় একজন শিক্ষানুরাগী হিসেবে পরিচিত। ব্রাহ্মণপাড়া মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ, ব্রাহ্মণপাড়া আব্দুল মতিন খসরু মহিলা ডিগ্রি কলেজ, ধান্যদৌল আবদুর রাজ্জাক খান চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়, ধান্যদৌল মুমু রোহান প্রি-ক্যাডেট কিন্ডার গার্ডেন, আশেদা জুবেদা ফোরকানিয়া মাদ্রাসাসহ ৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা করেছেন। মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী আমেরিকায় কখনো ট্যাক্সি চালিয়ে আবার কখনো রেস্টুরেন্টে কাজসহ বিভিন্ন ভাবে কঠোর পরিশ্রম করে তিনি এলাকার মানুষের কল্যাণে এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এছাড়াও তিনি মানুষের কল্যাণে ব্রাহ্মণপাড়া ডায়াবেটিক হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে নিজের ক্রয় করা জমি ও অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। তিনি নিউইয়র্কে কঠোর পরিশ্রমের আয় থেকে বেশিরভাগটাই খরচ করেন পরিবার, সমাজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য।
তার যেন উদ্দেশ্য একটাই, কোনো মতে দিন কাটিয়ে টাকা জমাতে হবে। জনহিতকর কাজে লাগাতে হবে। আর এই কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে মানুষের বিপদে আপদে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। তিনি এই প্রতিবেদককে জানান, নিউইয়র্কে কখনো ডিম, কখনো ডাল বা আলু ভর্তা দিয়ে দু বেলা খেয়ে কোনোরকমে তার দিন কাটে। আয়ের এক অংশ পরিবারের জন্য দেন, অবশিষ্ট টাকা সামাজিক কাজে ব্যয় করেন। কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে গড়ে তুলেছেন কেজি স্কুল থেকে শুরু করে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়।
তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুনেছেন এবং দেখছেন নিজ জন্মভূমিতে ভয়াল করোনার কারণে অনেকেই কর্মহীন হয়ে পড়েছে। সেই থেকে ভাবতে থাকেন নিজ এলাকা ব্রাহ্মণপাড়ার কথা। তিনি তার সেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে গোপনে গোপনে মধ্যবিত্ত ও অসহায় পরিবারে খাদ্যসামগ্রী রাতের আঁধারে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে আসেন।
মোশাররফ হোসেন খান চৌধুরী জানান, এ পর্যন্ত প্রায় ৩শ অসহায় পরিবারের মাঝে নগদ অর্থ ও খাদ্যসামগ্রী দেওয়া হয়েছে এবং এর ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, এবার মহামারী করোনার কালো ছায়ায় হারিয়ে গিয়েছে সকল আনন্দ আর রমজানের আমেজ। কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষেরা ঘরে থাকায় অনেক কষ্টে দিনযাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে অনেকে লজ্জায় চাইতে পারছেন না। তাই এমন সময়ে তিন’শতাধিক অসহায় মানুষের মাঝে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। তিনি বিত্তশালীদের আরও বেশি উদারভাবে এগিয়ে আসারও আহ্বান জানান। একইসাথে তিনি সাবেক আইনমন্ত্রী এডভোকেট আবদুল মতিন খসরুসহ যারা এলাকায় রমজানের উপহারসামগ্রী বিতরণ করেছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানান।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com