বিভিন্ন ভাতা এবং সহায়তা দেওয়ার নামে গরিব, অসহায় ও দুস্থদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার ৯ নম্বর কামাল্লা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফিরোজ খান ও মেম্বার কামাল উদ্দিনের বিরুদ্ধে। অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে একে অপরকে দোষারোপ করছেন তারা।
এদিকে চেয়ারম্যান ফিরোজ অসুস্থ থাকায় তার কাজ পরিচালনা করছেন ছেলে আবুল বাশার খান। এলাকায় প্রভাব খাটানোয় তাদের বিরুদ্ধে কোনো কিছু বলতে পারেন না বলেও অভিযোগ রয়েছে গ্রামবাসীর। গতকাল সোমবার নাম না প্রকাশের শর্তে অভিযোগগুলো করেন কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা।
গ্রামের ভুক্তভোগী বাসিন্দারা জানান, প্রতিবন্ধী, বয়স্ক, বিধবা, মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডি ও ভিজিএফ কার্ড এবং বিভিন্ন সহায়তা পেতে ইউনিয়ন পরিষদের নামে ইউপি সদস্যদের মাধ্যমে ক্ষেত্র বিশেষে ১ হাজার থেকে শুরু করে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত দিয়েছেন তারা। টাকা নিয়েও গরিব, অসহায় লোকগুলোকে তাদের কাঙ্ক্ষিত সুবিধা দিচ্ছেন না চেয়ারম্যান ফিরোজ খান ও মেম্বার কামাল উদ্দিন।
ভুক্তভোগী গ্রামবাসীরা আরও জানান, চেয়ারম্যান ফিরোজ খানের বয়স ৮৫’র উপরে। বার্ধক্যজনিত কারণসহ নানা অসুখে তিনি নিজে উপস্থিত না থেকে ছেলে আবুল বাশার খানকে দিয়ে বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করান। বাশারও অঘোষিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ইউনিয়নে ভাতা ও সহায়তা নিয়ে চলমান অবস্থা তার ইশারায় হচ্ছে। তাদের পরিবার প্রভাশালী হওয়ায় ভয়ে কেউ মুখ খুলতে পারে না। এসব বিষয়ে মেম্বার কামালের যোগসাজশ আছে বলেও অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
অভিযোগদের বিষয়ে ইউপি সদস্য কামাল উদ্দিন আমাদের সময়কে বলেন, ‘ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, অভিযোগটি সঠিক। তবে আমি এ টাকা ধরি নাই। ইউপি সচিব আবু সাইম ও সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী সাবিনা ইয়াছমিনকে নির্দিষ্ট হারে টাকা দিতে হয়।’
ইউপি সদস্য আরও বলেন, ‘দীর্ঘদিন যাবত এ অবস্থা চলে আসছে। চেয়ারম্যানের অবর্তমানে তার ছেলে আবুল বাশার খান ইউনিয়ন পরিষদের সবকিছু দেখভাল করছেন। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রতিহিংসামূলক।’
ইউপি সচিব আবু সাইম ও সমাজ সেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজ কর্মী সাবিনা ইয়াছমিনের মুঠোফোনে অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি অস্বীকার করেন।
কামাল্লা ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ খান আমাদের সময়কে বলেন, ‘অসুস্থতার কারণে আমি দীর্ঘদিন ঘর থেকে বের হই না। বিশেষ কোনো স্বাক্ষরের প্রয়োজন হলে, আমার কাছে নিয়ে আসলে আমি স্বাক্ষর দিয়ে দিই। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমার অবর্তমানে মেম্বার কামাল উদ্দিন বিভিন্ন বিষয়গুলো দেখভাল করছেন। কারও কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভাতার কার্ড দেওয়া হয় নাই, এমন ঘটনা আমাকে কেউ জানায়নি।’
এ বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অভিষেক দাশ আমাদের সময়কে বলেন, ‘এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। সহসাই তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com