কুমিল্লা জেলা উত্তর ও দক্ষিণে বিএনপিতে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে কোন্দল। এক যুগেরও বেশি সময় জনগণের প্রতিনিধিত্ব না করা এবং সাংগঠনিক তৎপরতা না থাকায় এ জেলার দক্ষিণে বিএনপি এখন ছন্নছাড়া দলে পরিণত হয়েছে।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, এক সময় কুমিল্লা দক্ষিণে বিএনপি দুই গ্রুপে বিভক্ত ছিলো। এক গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল (অব.) আকবর হোসেন। আর অপর গ্রুপের নেতৃত্বে ছিলেন সাবেক এমপি বেগম রাবেয়া চৌধুরী। আকবর হোসেন মারা যাওয়ার পর কিছুদিন গ্রুপিং বন্ধ থাকলেও ২০০৬ সালের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার গ্রুপিং তৈরি হয়। বর্তমানে এক গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিন। আর অপর গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন মেয়র মনিরুল হক সাক্কু। এই দুই নেতার কারণে জেলার দক্ষিণ বিএনপির রাজনীতি এখন অনেকটাই স্থবির হয়ে পড়েছে।
হাজী ইয়াছিন গ্রুপের দাবি, মেয়র সাক্কু ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন ঠিকই কিন্তু কাজ করছেন স্থানীয় এমপি হাজী বাহারের ‘বি’ টিম হিসেবে।
অপরদিকে সাক্কু গ্রুপের দাবি, হাজী ইয়াছিন রাজনীতিবিদ না, তিনি ব্যবসায়ী। এলাকায় থাকেন না। নেতাকর্মীদের পাশেও তাকে পাওয়া যায় না। কর্মীদের দু:সময়েও তাকে পাওয়া যায়না।
তবে গত মেয়র নির্বাচনে দুই গ্রুপ একবৃত্তে এসেছিলো। এই সুযোগে দলীয় প্রতীক নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হন সাক্কু। নির্বাচনের পরই নিজেদের বৃত্তে ভাঙন শুরু হয়। হাজী ইয়াছিনের বক্তব্য, আমরা কাজ না করলে সাক্কুর নির্বাচিত হওয়া সম্ভব ছিল না। বিজয়ী হয়ে আজ আমাদের ভুলে গেছে।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে কুমিল্লা সদর আসনে মনোনয়ন পায় হাজি ইয়াছিন। ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে এই আসন থেকে দ্বিতীয়বারের মতো নির্বাচন করা এই প্রার্থীর অভিযোগ মেয়র সাক্কু তার পক্ষে কাজ করেননি। অবশ্য সে সময় মেয়র সাক্কু প্রকাশ্যেই কয়েকটি অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, আমি যে দলেরই হই না কেনো কুমিল্লা সদরে আপনারা উন্নয়নের পক্ষে ভোট দিবেন।
বর্তমানে কুমিল্লা জেলা দক্ষিণ বিএনপির রাজনীতি অনেকটা আইশোলেশনে রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থতায় ঘরবন্দী জেলা সভাপতি বেগম রাবেয়া চৌধুরী। তার সঙ্গে দূরুত্ব বজায় রেখে চলছেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী আমিন উর রশীদ ইয়াছিন। আর জেলা বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া কেন্দ্রীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ায় জেলা থেকে কেন্দ্রকেই বেশি সময় দিচ্ছেন বলে নেতাকর্মীদের অভিযোগ।
কুমিল্লা দক্ষিণে বিএনপির রাজনীতি নিয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, জেলা কমিটির শীর্ষ পদ নিয়ে আছেন ইয়াছিন সাহেব। দল কেমন চলছে, কিভাবে চলছে তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন।
অপরদিকে, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক হাজী ইয়াছিন বলেছেন, আমি বসে নেই। একদিনের জন্যও নেতাকর্মীদের ছেড়ে যাইনি। দলের দু:সময়ে কর্মীদের পাশে ছিলাম, আছি এবং থাকবো।
সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com