কুমিল্লার প্রধান নদী গোমতীর বুড়িচং উপজেলার কংশনগর এলাকায় প্রতিরক্ষা বাঁধের দক্ষিণ অংশে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে নদীতীরের বাসিন্দারা আশঙ্কায় রয়েছেন নদীতীর ভাঙনের পাশাপাশি নিকট দূরত্বে থাকা কংশনগর ব্রিজটিও রয়েছে হুমকিতে।
এদিকে জিওব্যাগভর্তি বালু দিয়ে বাঁধ মেরামতে তোড়জোড় শুরু করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
সোমবার সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, জেলার বুড়িচং উপজেলার ভারেল্লা উত্তর ইউনিয়নের কংশনগর হয়ে পার্শ্ববর্তী ব্রাহ্মণপাড়ার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম কংশনগর গোমতী সেতু। এই ব্রিজের পূর্বপাশের প্রতিরক্ষা বাঁধের দক্ষিণ অংশের নদীতীর রক্ষায় বিগত সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে হাজার হাজার সিমেন্টের তৈরি ব্লক বসানো হয়েছিল।
সাম্প্রতিক সময়ে নদীর এই অংশে ভাঙন শুরু হলে অনেক ব্লক নদীর পানিতে তলিয়ে যায়। এ অবস্থায় নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের পাশাপাশি নিকট দূরত্বে থাকা কংশনগর গোমতী ব্রিজটিও হুমকির মুখে পড়ে। এর পরই বাঁধটি মেরামতে কাজ শুরুর প্রস্তুতি নেয় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
ভাঙনকবলিত এলাকায় বালু এনে জিওব্যাগভর্তি করা শুরু হয়। গত ৩-৪ দিনের অতিবৃষ্টিতে ভাঙন আরও ব্যাপক আকার ধারণ করে।
নদীতীরবর্তী মনোহরপুরের বাসিন্দা সালাম, জয়নাল, হাসনাবাদ গ্রামের খালেক, সামাদসহ অনেকেই জানান, কংশনগর ব্রিজের পূর্বপাশে নদীর দুই তীরই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই পানি উন্নয়ন বোর্ড উভয় অংশে সিমেন্টের তৈরি ব্লক বসিয়ে বিগত সময়ে নদীতীর রক্ষার চেষ্টা করেছিল।
তবে ২০১৮ সালে ব্রিজের পূর্বপাশে একটি প্রভাবশালী চক্র নদীতে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন শুরু করে।
ড্রেজার বসানোর পর গ্রামবাসী প্রতিবাদ, বিক্ষোভসহ পানি উন্নয়ন বোর্ড বরাবর ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করলেও অজ্ঞাত কারণে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ফলে ড্রেজারে বালু উত্তোলনের কারণে বাঁধের তলদেশের মাটি সরে গিয়ে প্রথমে ব্লকগুলো নদীতে তলিয়ে গিয়ে পরবর্তী সময় চলতি মাসের মাঝামাঝি নদীতীরে ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়।
স্থানীয় মনোহরপুর গ্রামের ৭০ বছরের বৃদ্ধ শামসুল হক বলেন, নদীর দুই তীরে হাজার হাজার ব্লক ছিল। ড্রেজার বন্ধে সেই সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যবস্থা গ্রহণ করলে নদীতীরে ভাঙন হতো না। পানিতে তলিয়ে যেত না হাজার হাজার সিমেন্টের তৈরি ব্লক।
বিষয়টি জানতে চাইলে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, কংশনগর এলাকায় ভাঙনকবলিত স্থানে আগেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। সেখানে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে এক মিটার প্রতিরক্ষা বাঁধ মেরামত করা হবে।
ইতিমধ্যে বালু এনে বস্তাভর্তি করা হয়েছে। সেলাই শেষে ইউএনও, এমপির প্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজনের উপস্থিতিতে বাকি কাজ শেষে বালু ফেলানো হবে।
তিনি আরও বলেন, নদী আমার না, এটা ডিসির ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। তবে নদীর কাজ আমরাও করি, ওরাও করে। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্নজন নদী রক্ষায় কাজ করে। গোমতীতে পানি নেই, তাই ভাঙনের সম্ভাবনাও নেই।
সূত্রঃ যুগান্তর
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com