কুমিল্লার চান্দিনায় ১২ বছরের মাদ্রাসা ছাত্রীকে ধ'র্ষণ করেছে ওই মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান শিক্ষক মাও. মো. ইউসুফ সোহাগ (৪০)। মাদ্রাসার শিশু ছাত্রীকে ধ'র্ষণের অভিযোগে বুধবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে তাকে আটক করে পুলিশে দেয় স্থানীয়রা।
মাও. মো. ইউসুফ দেবীদ্বার উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের সহিদুল ইসলাম এর ছেলে। তিনি চান্দিনাস্থ কুমিল্লা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জামে মসজিদের ইমাম এবং চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডে দারুল ইহসান তাহফিজুল কোরআন কওমী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা ও মোহতামিম।
মাদ্রাসা ছাত্রীর বাবা বিল্লাল হোসেন জানান- গত ২০১৯ সালে চান্দিনা পল্লী বিদ্যুৎ রোডের ওই মাদ্রাসায় আমার মেয়েকে ভর্তি করাই। গত ১৩ অক্টোবর (মঙ্গলবার) জানতে পারি ওই শিক্ষক আমার মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমি বিভিন্ন ভাবে খোঁজ নিয়ে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে মানবাধিকার কর্মী ও কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা লিটন সরকারকে বিষয়টি জানাই। তিনি মঙ্গলবার রাতেই ওই শিক্ষক সহ আমার মেয়েকে উদ্ধার করে।
ওই মাদ্রাসা ছাত্রী জানায়- মাদ্রাসায় অধ্যায়ণরত অবস্থায় গত এক মাস পূর্বে ইউসুফ হুজুর জোর পূর্বক আমার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করে। আমি বিষয়টি আমার অভিভাবককে জানাতে চাইলে তিনি আমাকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি দেখায়। পরবর্তীতে তিনি সুযোগ পেলেই আমার সাথে খারাপ কাজ করতো। মঙ্গলবার আমাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে জোর করে ঢাকায় নিয়ে যায়।
কুমিল্লা উত্তর জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা লিটন সরকার জানান- ওই শিক্ষক এ পর্যন্ত ৪টি বিবাহ করে। এখনও তার ২ স্ত্রী বর্তমান রয়েছে। কওমী মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করে শিশু ছাত্রীদের বিভিন্ন ভাবে জিম্মি করে ধ'র্ষণের আরও বহু অভিযোগ রয়েছে। মেয়েটির বাড়ি আমার নিজ গ্রামে। মেয়েটির বাবা মঙ্গলবার আমাকে বিষয়টি অবহিত করলে আমি দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মবর্তা ও অফিসার ইনচার্জ (ওসি)কে জানিয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করি। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের দাবী জানাই।
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জহিরুল আনোয়ার জানান- শিশু মেয়েটির ও মাদ্রাসা শিক্ষকের বাড়ি দেবীদ্বার থানা এলাকা হলেও ঘটনা স্থলটি চান্দিনা থানা এলাকায়। এ বিষয়ে চান্দিনা থানায় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
চান্দিনা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামসউদ্দীন মোহাম্মদ ইলিয়াছ জানান- বিষয়টি আমার জানা ছিল না। এখনই জানতে পেরে ওই মাদ্রাসা শিক্ষকসহ মেয়েটিকে থানায় এনেছি। বিস্তারিত জেনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
দেবীদ্বার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাকিব হাসান জানান, বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। আমি চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভিষন কান্তি দাস’র সাথে কথা বলেছি, ওই মাদ্রাসা শিক্ষক মাও. মো. ইউসুফ সোহাগ’র সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ধ'র্ষক সোহাগ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও নিয়ন্ত্রিত মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com