কুমিল্লা ও নরসিংদী জেলায় বিদ্যমান সমন জারি পদ্ধতির পাশাপাশি মামলার সাক্ষীকে মোবাইল ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে সাক্ষগ্রহণের তারিখ জানিয়ে দেয়া হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে বিদ্যমান সমন জারি পদ্ধতির পাশাপাশি এসএমএস বার্তার মাধ্যমে সাক্ষগ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিতকরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। পরীক্ষামূলকভাবে কুমিল্লা ও নরসিংদীতে এই সেবা দেয়া হচ্ছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক এই কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সমন জারি প্রক্রিয়ার পাশাপাশি সাক্ষীর মোবাইল ফোনে এসএমএস প্রদানের মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ অবহিতকরণ কার্যক্রম বিচারপ্রার্থী জনগণ ও রাষ্ট্রের সময় ও খরচ কমাবে। বিচারপ্রার্থী জনগণের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমাবে। এছাড়া বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে এবং বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমবে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে মামলার দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ আদালতে সময়মতো সাক্ষী হাজির হতে না পারা, সাক্ষীর অনুপস্থিতি কিংবা সাক্ষীর গরহাজির। এর পেছনে অন্যতম কারণ হলো সাক্ষীর সময়মতো সমন না পাওয়া। এর পেছনেও রয়েছে যথেষ্ঠ যুক্তি ও কারণ। সাক্ষীকে এসএমএস প্রেরণ কার্যক্রম এসব কারণ ও যুক্তি খণ্ডন করে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘এই সেবার মাধ্যমে মামলার সাক্ষীরা আদালতে বিচারাধীন মামলার ধার্য তারিখ সম্পর্কে দ্রুততম সময়ে ও সহজে জানতে পারবেন এবং তারা তা একই সময়ে জানতে পারবেন। যেহেতু ইলেকট্রনিক পদ্ধতিতে ও মোবাইলে এই মেসেজ প্রদান করা হবে, তাই কেউ মেসেজ পেয়ে অস্বীকারও করতে পারবেন না। এতে করে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সাক্ষীদের মধ্যেও একটি দায়বদ্ধতা তৈরি হবে। ফলে আদালতে সময়মত সাক্ষী উপস্থাপন ত্বরান্বিত হবে। স্বল্প সময়ে ও সহজে ন্যায়বিচার প্রদান করা সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আজ পাইলট ভিত্তিতে কুমিল্লা ও নরসিংদীতে সমন জারির এসএমএস পদ্ধতি চালু করা হলো। এ পদ্ধতিতে আদালত কর্তৃক কোনো মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারিত হলে তা ডিজিটাল সিস্টেম ব্যবহার করে সাক্ষীদেরকে জানানো হবে। পাশাপাশি বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতেও সমন পাঠানো হবে। পাইলট ভিত্তিতে গৃহীত এ কার্যক্রম পর্যালোচনা করে এবং এ থেকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে সারাদেশে এ কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে।’
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, ‘এসএমএস বার্তার মাধ্যমে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ মামলার সাক্ষীকে অবহিত করার বিষয়টি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণ অগ্রযাত্রায় আরও একটি ঐতিহাসিক মাইলফলক।’
তিনি বলেন, ‘কোভিড লকডাউনকালে ভার্চুয়াল আদালত পরিচালনা এবং এসএমএসের মাধ্যমে গৃহীত কার্যক্রমের মাধ্যমে বিচার বিভাগের যে যাত্রা শুরু হলো, এর সূদুরপ্রসারী প্রভাব কাজে লাগবে। একটি ছোট্ট এসএমএসের মাধ্যমে অনেক জটিলতার সমাধান হবে।’
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘এ বছরের মধ্যে দেশের প্রতিটি অঞ্চলে ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দিতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বদ্ধপরিকর। ইতোমধ্যে দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ এলাকায় ডিজিটাল সংযোগ পৌঁছে দেয়া হয়েছে। হাওর, দ্বীপ, চরসহ দুর্গম অঞ্চলে এ সংযোগ পৌছানোর কাজ শুরু হয়েছে।’
আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. আফজাল হোসেন, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবির, কুমিল্লার জেলা ও দায়রা জজ মো. আতাবুল্লাহ্, নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ মোসতাক আহমেদ, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দীন বক্তব্য দেন।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com