করোনা ভীতি উপেক্ষা করে ঈদ কেনাকাটায় ব্যস্ত কুমিল্লাবাসী। পছন্দের জিনিস কিনতে এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ছুটছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। শপিংমল-ফুটপাতে ক্রেতা বিক্রেতা কেউই মানছেন না স্বাস্থ্যবিধি।
নগরীর চাত্তার খান কমপ্লেক্স ও খন্দকার হক টাওয়ারে গা ঘেঁসে চলতে দেখা গেছে শপিংয়ে আসা ক্রেতাদের। অভিভাবকদের সঙ্গে ঈদ শপিংয়ে আসছে শিশুরাও। বিক্রেতারা বলছেন, ঈদ যতো ঘনিয়ে আসছে ক্রেতাদের ভিড় ততই বাড়ছে। প্রতিটি মার্কেটে বিক্রিও হচ্ছে সন্তোষজনক।
রোববার (২ মে) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন শপিংমল ও মার্কেট ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। ঈদ শপিংয়ে উপচেপড়া ভিড়ের কারণে কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রীজ, কান্দিরপাড়, চকবাজর ও শাসনগাছা এলাকায় তীব্র যানজটেরও দেখা মেলে।
করোনা মহামারিতে প্রতিদিন বাড়ছে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যাও। সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ জারির পরও নগরবাসী কিংবা জনসাধারণের মধ্যে যেন কোনো ধরনের ভীতি নেই। এই সংকটকালেও নিশ্চিন্তে ঈদের কেনাকাটা করছেন তারা।
শহরে মধ্যবিত্তরা শপিং করছেন নিউ মার্কেটের নিচতলা ও ফুটপাতে। এসব স্থান ক্রেতায় পরিপূর্ণ। কান্দিরপাড় লির্বাটি সিনেমা হলের সামনে দোকানগুলোতে গায়ে গা লাগিয়ে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে মানুষজনকে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের অনেকের মুখে নেই মাস্ক। আবার কারো থাকলেও তা সঠিক নিয়মে পরা ছিল না।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ঘোষিত তৃতীয় দফায় লকডাউনে নগরীতে তীব্র যানজটের কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে জরুরি প্রয়োজনে বাইরে বের হওয়া মানুষদের। সকাল ১০টার পর কান্দিরপাড় থেকে মনোহরপুর পর্যন্ত দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা যায়, শপিংমল ও দোকানপাট খুলে দেয়ার সঙ্গে সঙ্গেই একপ্রকার হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ক্রেতারা। এদিকে ‘মুভমেন্ট পাস’ নিয়ে চলাফেরার কথা থাকলেও কুমিল্লায় তা নিয়ে এখন আর কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই মানুষের মাঝে। স্বাস্থ্যবিধি কেউ কেউ মানছেন আর কেউবা মানছেন না, যারা মানছেন না তাদেরকে বাধ্য করারও যেন কেউ নেই।
ছাত্তার খান কমপ্লেক্সে ঈদের শপিং করতে এসেছেন খাদিজা আক্তার। তিনি বলেন, করোনার মধ্যেও তো ঈদ করতে হবে। তাই কিছু কেনাকাটা করতে এসেছি। তবে ঘোরাঘুরি কম করছি, পছন্দ হলেই কিনে নিচ্ছি পছন্দের পোশাক।
তবে বিক্রেতারা বলছেন ভিন্ন কথা, মার্কেটে মার্কেটে যে পরিমাণ জনসমাগম দেখা যাচ্ছে কিন্তু সে হিসেবে বেচা-বিক্রি অনেক কম। অধিকাংশই শুধু জিনিসপত্র দেখছেন আর এক মার্কেট থেকে অন্য মার্কেটে ঘুরছেন।
নগরীর নুর পুরের বাসিন্দা নূর উদ্দিন মজুমদার বের হয়েছেন সন্তানদের জন্য নতুন কাপড় কিনতে। বের হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের চেয়ে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন অনেক কমে গেছে। অনেকেই তো বের হচ্ছেন। তাইতো আমরাও বের হয়েছি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হয়েছি। ঘণ্টাখানেক পর বাসায় ফিরে যাবো। বাকিটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলাম।
জেলা সিভিল সার্জন ডা. মীর মোবারক হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, কুমিল্লায় দিন দিন করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সবাইকে আরও সতর্ক থাকতে হবে। রোববার পর্যন্ত কুমিল্লায় ১২ হাজার ১০১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ৩৮০ জন।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com