বাড়ির উঠানে কবর খুঁড়ে সন্দেহভাজনদের কাফনের কাপড় পরিয়ে কবরে শোয়ালে প্রকৃত চোরের মুখ দিয়ে রক্তবমি হবে এবং নাক দিয়ে রক্ত ঝরবে। এ পদ্ধতিতেই চোর ধরার পাশাপাশি চুরি হওয়া টাকাও উদ্ধার করা যাবে।
কথিত কবিরাজ সালাউদ্দিনের এমন কথায় চুরি হওয়া ৮৫ হাজার টাকা ও চোরকে ধরতে নিজ বাড়ির উঠানে কবর খোঁড়েন কাতার প্রবাসী আমিনুল ইসলাম। বাজার থেকে নিজেই কাফনের কাপড় কিনে এনে স্থানীয় সোহাগ হোসেন ও সাব্বির হোসেনকে পরিয়ে কবরে শোয়ান। কিন্তু তারা কেউ রক্তবমি করেনি। তাই ধরা পড়েনি চোরও।
গত ২৬ জুন বিকেলে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বাকই উত্তর ইউনিয়নের নূরপুরে এ ঘটনা ঘটে। দৃশ্যটি দেখতে গ্রামের অর্ধশতাধিক নারী-শিশু ওই বাড়িতে জড়ো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের একজন গোপনে নিজের মোবাইলে ওই ঘটনার ৫৭ সেকেন্ড ও ১১ সেকেন্ডের দুটি ভিডিও করে ফেসবুকে ছড়িয়ে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়।
ভিডিও দুটিতে দেখা গেছে, কবরে নামার পর কাফনের কাপড় দিয়ে সোহাগের মুখ ঢেকে দেন প্রবাসী আমিনুল ইসলাম। কিন্তু রক্তবমি না হওয়ায় সোহাগ কিছুক্ষণ পর নিজেই কবর থেকে উঠে আসেন।
ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী সোহাগের বাড়িতে সালিশ বৈঠক বসে। কিন্তু অভিযুক্ত আমিনুল ইসলাম সময় যাওয়ায় বৈঠক স্থগিত করা হয়। পরে প্রবাসী আমিনুল ইসলাম, তার স্ত্রী ফেরদৌসী, স্থানীয় আব্দুল ওহাব ও সালাউদ্দিন কবিরাজের বিরুদ্ধে লালমাইয়ের ইউএনও অজিত দেবের কাছে লিখিত আবেদন করেন ভুক্তভোগী সোহাগ। ইউএনও তাৎক্ষনিক বিষয়টি লালমাই থানাকে তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে লালমাই থানার এসআই কামাল হোসেন বুধবার বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সত্যতা পান। ওই সময় থেকেই অভিযুক্ত প্রবাসী আমিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রীসহ বাকিরা পলাতক।
লালমাই উপজেলার বাগমারা বাজারে ‘মুশকিল আশান’ চেম্বার দিয়ে লোক-ঠকানোর কার্যক্রম চালাচ্ছেন কথিত কবিরাজ মো. সালাউদ্দিন। মোবাইলে তিনি বলেন, আমি যে পদ্ধতিতে বলেছি- তারা সেই পদ্ধতিতে কাজ করেনি। এ কারণেই চোর ধরা পড়েনি।
লালমাইয়ের ইউএনও অজিত দেব বলেন, এটা ফৌজদারি অপরাধ। লালমাই থানা পুলিশকে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com