কুমিল্লার লালমাইয়ের চাষিরা চাল কুমড়া চাষে ঝুঁকছেন
যতদূর চোখ যায় চারিদিকে সবুজ আর হলুদের হাতছানি। থোকা থোকা সবুজ পাতার ফাঁকে ফুটে রয়েছে অজ¯্র হলুদ রঙের ফুল। তবে এ দৃশ্যটি কোনো ফুলবাগানের নয়, সবজি চাল কুমড়া ক্ষেতের দৃশ্য এটি। কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ী এলাকা জুড়ে চাষ হয়েছে শীতের সবজি চাল কুমড়া। অল্প সময়ে অধিক লাভের আশায় স্থানীয় কৃষকদের পাশাপাশি গৃহস্থরাও চাল কুমড়া চাষ করছেন।
লালমাই এলাকার চাষি সিরাজুল ইসলাম। তিনি কয়েক বছর আগে শখের বশে চাল কুমড়া চাষ করে লাভবান হওয়ার পর থেকে প্রতিবছরই বাণিজ্যিকভাবে চাল কুমড়া চাষ করছেন। বিগত কয়েক বছর ৫০ হাজার টাকা করে খাটিয়ে প্রতিবার দেড় লাখ টাকার বেশি কুমড়া বিক্রি করতে পারছেন। প্রতি কাঠা জমি চাষ করতে ১০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। কৃষক রমিজ মিয়া গত নভেম্বরের মাঝামাঝি ৩০ শতক জমিতে চাল কুমড়ার চারা রোপণ করেছিলেন তিনি। পরে সেই জমিতে চারাগুলোর ওপরে প্লাস্টিকের সুতা দিয়ে মাচা তৈরি করে দেন। চারাগুলো গাছ হয়ে এখন সেই মাচায় উঠছে। ফুলের সঙ্গে কোনো কোনো গাছে চাল কুমড়াও ঝুলছে এখন।
রমিজ মিয়া চারা রোপণ করার সময় জমিতে ৩০ কেজি টিএসপি সার ব্যবহার করেছিলেন। পরে গাছে ফুল আসার আগে আরও একবার সার ব্যবহার করা হয়। এছাড়া পোকার আক্রমণ থেকে গাছ ও চাল কুমড়া রক্ষা করতে সপ্তাহে একবার কীটনাশক প্রয়োগ করা হয় ক্ষেতে। সাড়ে তিন ফুট দূরত্বে রোপণ করা চারার একেকটি সারির দূরত্ব রাখা হয়েছে চার ফুট। আর ৮/১০ দিনের মধ্যে তারসহ অন্যান্য লোকের ক্ষেত থেকে চাল কুমড়া বিক্রি শুরু হবে। আর তখন স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় পৌঁছে যাবে লালমাই এলকায় চাষ করা চাল কুমড়া। রমিজ মিয়া বলেন, ট্রাক, পিকআপ ভ্যান নিয়ে এসে ব্যবসায়ীরা চাল কুমড়া পাইকারি দামে কিনে নিয়ে যাবেন।
এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কুমিল্লার উপ-পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, লালমাই এলাকার মানুষ বাণিজ্যিক চিন্তা ছাড়াও বাড়িঘরের আঙিনায় চাল কুমড়া চাষ করে আর্থিক দিক থেকে হচ্ছেন লাভবান। এতে একদিকে সবজির চাহিদা যেমন পূরণ হচ্ছে, ঠিক তেমনি পূরণ হচ্ছে আর্থিক চাহিদাও।