কুমিল্লায় ২৪৬ জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন ইউএনও

দীর্ঘ চার মাস ধরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ১৬৯ জনপ্রতিনিধির সম্মানী ও ৭৭ জন গ্রামপুলিশ সদস্যের বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মনজুরুল হক। তার দাবি, জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমে তারা তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেননি। এজন্য কাজ আদায় করিয়ে নিতে তিনি তাদের সম্মানী ও বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন।

এদিকে মাসিক সম্মানী ও বেতন-ভাতা না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশ সদস্যরা। তারা দ্রুততম সময়ে তাদের পাওয়া বুঝিয়ে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জন্মনিবন্ধন কার্যক্রমে দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনে গতবছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাস পর্যন্ত উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারসহ ১৬৯ জনের সম্মানী বন্ধ রয়েছে। আর গতবছরের নভেম্বর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত বেতন-ভাতা পান না গ্রামপুলিশের ৭৭ জন সদস্য। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মনজুরুল হক তাদের সম্মানী ও বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গ্রামপুলিশের একজন সদস্য বলেন, ‘গত তিনমাস ধরে সরকারি বেতন-ভাতা কিছুই পাচ্ছি না। এখন সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছি।’

চিওড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. একরামুল হক বলেন, ‘সরকার থেকে আমাদের সম্মানী এসেছে বলে শুনেছি। কিন্তু ইউএনও নিবন্ধন অজুহাতে সম্মানী দেওয়া বন্ধ রেখেছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী আমরা জন্মনিবন্ধন করেছি। তারপরও কেন সম্মানী দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে বিষয়টি আমার বুঝে আসে না।’

গত চারমাস ধরে সম্মানী পান না বলে জানান বাতিসা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিএম জাহিদ হোসেন টিপু। বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক বলে মন্তব্য করেন তিনি।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা ইউপি চেয়ারম্যান সমিতির সভাপতি ও আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. গোলাম ফারুক হেলাল বলেন, জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সফল করতে বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। এতে গ্রামপুলিশের অনেক সদস্যের পরিবার চালাতে কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি মানবিকভাবে দেখা উচিত।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মনজুরুল হক বলেন, শূন্য থেকে ৪৫ দিন বয়সী শিশুদের জন্মনিবন্ধন কার্যক্রম সফল করা জনপ্রতিনিধি ও গ্রামপুলিশদের দায়িত্ব। তারা এ দায়িত্ব পালনে অবহেলার কারণে শতভাগ নিবন্ধন হচ্ছে না। এজন্য কাজ আদায় করে নিতে সাময়িকভাবে তাদের সম্মানী ও বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে ফেব্রুয়ারি থেকে যথারীতি বেতন-ভাতা চালু করা হবে বলে তিনি জানান।

আরো পড়ুন