সাইফুল-শিরীন দম্পতির কোলজুড়ে প্রথম সন্তান আসে ২০১৫ সালে। এরপর আরও একটি সন্তানের আশায় কেটেছে ৬ বছরেরও বেশি সময়। এবার তাদের ঘর আলো করে একসঙ্গে এলো আরও চার সন্তান।
কুমিল্লার একটি ক্লিনিকে বুধবার রাত ১০টায় সিজারের মাধ্যমে জন্ম নেয় ওই চার শিশু। এর মধ্যে তিনটি ছেলে ও একটি মেয়ে। সুস্থ আছেন মা শিরিন আক্তারসহ চার নবজাতক।
চার নবজাতকের বাবা সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার গঙ্গনগর গ্রামে।
সাইফুল বলেন, ‘২০১৪ সালে শিরিনকে পারিবারিকভাবে বিয়ে করি। আমাদের সাত বছরের একটি মেয়ে আছে। আরও একটি সন্তানের জন্য চেষ্টা করি। তবে ছয় বছরের বেশি সময় পার হয়।’
বুধবার রাতে ফুটফুটে চার সন্তান জন্ম দেন স্ত্রী শিরিন। এতে আনন্দের বন্যা বইলেও চিন্তার ভাঁজ চা-পান বিক্রেতা সাইফুলের কপালে। বলেন, ‘আমি সামান্য চা দোকানি। আমার এত কম আয়ে কিভাবে পাঁচ ছেলে-মেয়েকে লালন-পালন করব তা বুঝতেছি না। আল্লায় যদি রহম করে।’
শিরিন বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। এই ক্লিনিকের ডাক্তার লিরা আফা প্রথম থাইক্কা আমডারে সহযোগীতা করছে। সিজারের সময় বলছে টাকা পয়সা নিয়ে চিন্তা না করতে। আফার আমডার মত গরিব মানুষকে ভরসা দিছে। সব সময় খবর রাখতাছে। আফা না থাকলে কই যাইতাম, কি করতাম জানি না।’
ক্লিনিকের চিকিৎসক নাজমা মজুমদার লিরা বলেন, ‘বুধবার রাতে শিরিনকে সিজার করিয়েছি। গর্ভবতী হওয়ার পর থেকে তাকে আমি দেখতাম। নিয়মিত পরীক্ষা করিয়েছি। বুধবার রাতে ৩০ মিনিট লেগেছে সিজারে। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত মা ও চার নবজাতক সুস্থ আছেন।’
নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘একসঙ্গে চার নবজাতকের সিজার করিয়েছি এবং তারা সুস্থ আছে, এটা একজন চিকিৎসক হিসেবে আমার কাছে খুব আনন্দের। তবে আরো ভালো লাগছে শিরিন সাইফুল দম্পতি টাকা নিয়ে চিন্তা করছিল। আমি তাদেরকে আশ্বস্ত করেছি টাকা নিয়ে যেন চিন্তা না করে। আমার পক্ষে যা করার দরকার আমি সব করব।’
এখন চার শিশু রয়েছে শিশু বিশেষজ্ঞ ফিরোজ আহমদের তত্বাবধানে। তিনি বলেন, ‘সাধারণত গর্ভে ৩৭ থেকে ৪০ সপ্তাহ পূর্ণ হলে সিজার করানোর সময় হয়। এখানে যেহেতু চার নবজাতক, তাই ৩৬ সপ্তাহে সিজার করানো হয়েছে।’
তাদেরকে নিয়মিত দেখাশোনা করা হচ্ছে জানিয়ে বলেন, ‘নবজাতকদের জন্য বিশেষ কোনো ব্যবস্থার দরকার হয়নি।’
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com