কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে জড়িয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। এ ঘটনায় আহত এক ছাত্রলীগ নেতা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতাসহ দশজনের নামোল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাত আসামি করা হয় ২০ জনকে। শনিবার বিকালে কলেজের নজরুল হলে গিয়ে দেখা যায়, হল প্রায় ফাঁকা। অনেক কক্ষে তালা দেয়া। অন্তত ৩০ ছাত্রলীগ নেতা পলাতক রয়েছেন। এছাড়া হলের সাধারণ ছাত্রদের মধ্যেও আতঙ্ক দেখা দেওয়ায় অনেকে হল ছেড়ে দিয়েছেন।
২৭ জুলাই নাজমুল হাসান শুভ বাদী হয়ে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা চেষ্টা মামলা দায়ের করেন। শুভ নগরীর সালমানপুর এলাকার আবদুল হাইয়ের ছেলে।
মামলার আসামিরা হলেন ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা রাকিবুল ইসলাম জুবায়ের (২৭), আবদুর রহমান বাবু (২৭) ও আশিকুর রহমান জুয়েল (২৭)। অন্য এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন ইমরান (২২), সাজ্জাদ (২৩), আরাফাত (২২) সালাউদ্দিন ইকু (২২), জামশেদ আলম (২২),জুয়েল (২২) ও ওমর আল জুনায়েদ (২৩)।
মামলার এজাহার ও কলেজ সূত্রে জানা যায়, গত ২৩ জুলাই দুপুরে ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের তৃতীয় গেট সংলগ্ন্ একটি রেস্টুরেন্টে আড্ডা দিচ্ছিলেন কলেজের ইতিহাস বিভাগ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান শুভ। এসময় তাকে ধরে নিয়ে আসেন কয়েকজন ছাত্রলীগ নেতা। প্রথমে কলেজের রসায়ন ভবনের সামনে এনে শুভকে মারধর করা হয়। এরপর কলা ভবন পার করে কলেজের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালের সামনে স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয় তাকে। প্রায় ৩০ মিনিট ধরে তিন দলে বিভক্ত হয়ে শুভর পা ও কোমরে স্টাম্প দিয়ে পেটানো হয়। এ ঘটনা থামাতে গেলে কলেজের এক শিক্ষক গেলে, তাকে লাঞ্ছিত করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়। শুভকে কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হামলার পরপর কলেজে আনন্দ মিছিল করে হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতারা।
এদিকে মামলার পর কলেজের নজরুল হলে পুলিশ আসার সংবাদে ছাত্রলীগ নেতাদের পাশাপাশি সাধারণ অনেক ছাত্ররাও পালিয়ে যায়।
সূত্র আরও জানায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ২০১৯ সালের ১৯ মে মামলার প্রধান তিন আসামিকে কলেজ ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করে কুমিল্লা মহানগর ছাত্রলীগ। তবে পদে না থাকলেও কলেজের নিয়ন্ত্রণ থেকে যায় ওদের হাতেই। নজরুল হলের নিয়ন্ত্রণ, নিউ হোস্টেলের নিয়ন্ত্রণ, কলেজ ক্যাফেটেরিয়া ও পুকুর লিজসহ শুরু করে কলেজের অভ্যন্তরীণ অনেক কিছুর নিয়ন্ত্রণ থাকে তাদের হাতে।
এ বিষয়ে মামলার বাদী ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান শুভর কাছে জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আবু জাফর খান বলেন, আমি ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। অভ্যন্তরীণভাবে সবগুলো বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় যাদের জড়িত থাকার প্রমান মিলবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মিঠুন সরকার বলেন, আসামিদের ধরতে পরপর দুইদিন অভিযান পরিচালিত হয়েছে। খুব শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com