কুমিল্লায় বাল্কহেডের ধাক্কায় ভেঙে পড়ল সেতু

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় বাল্কহেডের ধাক্কায় একটি পাকা সেতুর একাংশ ভেঙে পড়েছে; তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।

বৃহস্পতিবার গভীর রাত পৌনে ৩টার দিকে উপজেলার ছান্দ্রা গ্রামের কাছে কালাডুমুর নদীতে এ ঘটনা ঘটে জিংলাতলী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন জানান।

তিনি শুক্রবার বিকালে আরও জানান, দুর্ঘটনার পর স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই বাল্কহেডের চালক ও তার সহকারীরা সাঁতরে তীরে উঠেন। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত সেতুর ভাঙা অংশ বাল্কহেডের উপর পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

“সেতুটি ভেঙে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার কয়েক হাজার মানুষ। তাদেরকে শুক্রবার সকাল থেকে ছয় কিলোমিটার পথ ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।”

স্থানীয় বাসিন্দা নজির আহমেদ ও হুমায়ুন কবির জানান, গভীর রাতে হঠাৎ বিকট শব্দে গ্রামের মানুষের ঘুম ভেঙে যায়। শব্দ শুনে বাইরে এসে তারা দেখেন, কালাডুমুর নদের ওপর সেতুর মাঝখানের একটি অংশ ভেঙে নিচে পড়ে গেছে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় বাল্কহেডের চালক ও চালকের তিন সহকারীকে উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনার পর ওই সেতু দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ওই সেতু দিয়ে উপজেলার গলিয়ারচর, চররায়পুর, চারপাড়া, দাসপাড়া, ভিটিচারপাড়া ও ছান্দ্রা গ্রামের প্রায় তিন হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে থাকেন।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের দাউদকান্দি স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. রাসেল আহমেদ বলেন, “গভীর রাতে দুর্ঘটনার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেতু এলাকায় গিয়েছিলাম। কিন্তু বাল্কহেডটি সেতু ভেঙে আটকে থাকায় এবং লোকজন হতাহত না হওয়ায় ফায়ার সার্ভিসের কোনো সহযোগিতার প্রয়োজন হয়নি। তাই ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ফিরে এসেছেন।”

স্থানীয়রা জানান, প্রায় ১০ বছর আগে কালাডুমুর নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে মেসার্স রায়হান ইসরাত পরিবহনের বাল্কহেডটি ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় বালু ফেলে ওই নদীর ওপর দিয়ে গোমতী-মেঘনা নদীর দিকে ফিরছিল।

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় যাওয়ার পথে ছান্দ্রা গ্রামের কাছে খালি বাল্কহেডটির উচ্চতা বেশি থাকায় সেতুর একটি পিলারে ধাক্কা দেয়। এতে সেতুর মাঝখানের একটি অংশ নদীতে পড়ে যায়।

জিংলাতলী ইউনিয়ন পরিষদের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, “বাল্কহেডটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে লোকজনের চলাচলের জন্য বিকল্প সেতু নির্মাণের চেষ্টা অব্যাহত থাকবে আমাদের। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করব।”

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) দাউদকান্দি উপজেলা প্রকৌশলী মো. আফসার হোসেন খন্দকার সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা সেতুটি ভেঙে পড়ার খবর শুনেছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতু এলাকা পরিদর্শন করে এ ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।“

আরো পড়ুন