জার্মানির এই দলের সবচেয়ে চেনা মুখ টমাস মুলার। চতুর্থ বিশ্বকাপ খেলছেন। বিশ্বকাপে গোল মেসি-রোনালদোর চেয়েও বেশি। গত বিশ্বকাপের কথা মনে করিয়ে দিয়ে তিনি বলছেন, ‘গতবার দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও তো আমরাই ফেবারিট ছিলাম। জিতেছি? এবারও কোস্টারিকাকে সহজ ভাবার কোনো কারণ নেই।’
তারপরও ৮-০ নিয়ে বেশ চর্চা হচ্ছে। এতটাই যে বিশ্বকাপে এত বড় ব্যবধানে কয়টা জয় আছে, সেই রেকর্ড ঘাঁটাঘাঁটি করতে দেখলাম অনেক সাংবাদিককে। ৮-০ আছে তিনটি, যার একটি আবার জার্মানির কীর্তি। ২০০২ বিশ্বকাপের যে ম্যাচে হ্যাটট্রিক করে মিরোস্লাভ ক্লোসার রেকর্ড–যাত্রার শুরু।
স্পেন-জাপান ম্যাচে স্পেন জিতলে হিসাবটা খুব সহজ হয়ে যায়। জার্মানিকে জিতলেই চলবে। কিন্তু জাপান এই বিশ্বকাপে আবারও একটা অঘটন ঘটিয়ে ফেললেই সমস্যা। ৮-০ প্রাসঙ্গিক তখনই। যেটির মূলে এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে একতরফা ম্যাচে কোস্টারিকার বিপক্ষে স্পেনের ৭-০ গোলে জয়। হান্সি ফ্লিক যদিও ওই ৭-০ না দেখে দেখছেন সেখান থেকে কোস্টারিকার ফিরে আসার মানসিক শক্তিকে, ‘৭ গোলে হারার ধাক্কা সামলে জাপানকে হারানোটা সোজা কথা নয়। কোস্টারিকাকে সম্মান করা উচিত। ৮-০ জয়ের কথা বললে ওদের অসম্মান করা হয়।’
তা তো করা হয়ই। হচ্ছেও। জার্মানিকে নিয়ে তুমুল আলোচনায় কোস্টারিকারও যে দ্বিতীয় রাউন্ডে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে, তা যেমন চাপাই পড়ে যাচ্ছে। স্পেনের সঙ্গে ম্যাচটায় কোনো ভূত আসর করে থাকবে, নয়তো কোস্টারিকা দলটা এত খারাপ তো নয়। বড় কোনো তারকা নেই সত্য, কিন্তু দল হিসেবে খেলে মধ্য আমেরিকান দেশটি কী করতে পারে, তার প্রমাণ তো ২০১৪ বিশ্বকাপই। গ্রুপ পর্বে দুই সাবেক বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ইতালি ও উরুগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত চলে যাওয়া সেই বিশ্বকাপের সবচেয়ে রোমান্টিক গল্প হয়ে আছে।
কোস্টারিকা দলে বড় তারকা নেই, কথাটা অবশ্য ঠিক নয়। কেইলর নাভাস তো আছেন। তারকা বলতে যা বোঝায়, তা অবশ্য ওই একজনই। সংবাদ সম্মেলনে ফ্লিকের সঙ্গী লুকাস ক্লস্টারমানকে কোস্টারিকার এক সাংবাদিক মজার একটা প্রশ্ন করলেন। লাইপজিগের এই ডিফেন্ডারকে কোস্টারিকায় সবাই চেনে। কারণ, লাইপজিগের হয়ে ক্লস্টারমান যে বুন্দেসলিগায় খেলেন, কোস্টারিকায় তা খুব জনপ্রিয়। তা ক্লস্টারমান কোস্টারিকা দলে কেইলর নাভাস ছাড়া আর কাকে চেনেন? কোস্টারিকা দল সম্পর্কে অনেক ভালো ভালো কথা বলে ক্লস্টারমানকে স্বীকার করতে হলো, নাভাসকে ছাড়া আসলে তিনি কাউকেই চেনেন না।
কাগজে-কলমে লড়াইটা এমনই অসম। কিন্তু জার্মানি-জাপানও কি তা-ই ছিল না! আল বায়ত স্টেডিয়ামে আজ তাই প্রবল উৎকণ্ঠা নিয়েই নামবে জার্মানি। যে ম্যাচ নতুন এক ইতিহাসকে বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষায়। বিশ্বকাপ ফুটবলে এই প্রথম বাঁশি বাজাবেন একজন নারী রেফারি। ফ্রান্সের স্তেফানি ফ্রাপারের সঙ্গী দুজনও নারী। একজন ব্রাজিলের, আরেকজন মেক্সিকোর।
এমন একটা যুগান্তকারী ঘটনা কাতারেই ঘটছে। চাইলে এর অন্য তাৎপর্য খুঁজে নিতেই পারেন। জার্মানির ম্যাচ বলে আরও বেশি। প্রথম ম্যাচে গ্রুপ ছবি তোলার সময় মুখে হাত দিয়ে জার্মান খেলোয়াড়দের প্রতীকী ওই প্রতিবাদের কথা মনে নেই!
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com