ডেস্ক রিপোর্টঃ রংপুর রাইডার্সের টপ অর্ডার ঘুমিয়ে ছিল পুরো বিপিএলে। ক্রিস গেইল, ব্রেন্ডন ম্যাককালাম ও জনসন চার্লসের মতো ব্যাটসম্যান থাকার পরও ঝড় তুলতে দেখা যায়নি তাঁদের। এই কুম্ভকর্ণদের ঘুম ভাঙতে শুরু করেছে নক আউট পর্বে এসে। এলিমিনেটরে ঝোড়ো সেঞ্চুরিতে গা ঝাড়া দিয়েছিলেন গেইল। দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এসে জেগে উঠলেন চার্লস ও ম্যাককালাম। এই দুজনের তাণ্ডবে ১৯২ রান তুলেছিল রংপুর। তাড়া করতে নেমে কুমিল্লা শেষ বলে অলআউট হয়েছে ১৫৭ রানে। ৩৬ রানে জিতে ফাইনালে চলে গেল রংপুর। আগামীকাল প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন নিয়ে তারা মুখোমুখি হবে তিনবারের চ্যাম্পিয়ন ঢাকার।
কাল অনেক নাটকের পর ৭ ওভারে ১ উইকেটে ৫৫ রানে থেমেছিল রংপুর। আজ শুরুটাও ঢিমেতালে করেছে তারা। প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৬ রান এল। চার্লসের তখনো পঞ্চাশ হয়নি। ম্যাককালামও ১১ বলে করেছেন ৭ রান। দশম ওভারে গ্রায়েম ক্রেমারের ওভারে দিয়ে বদলে যেত শুরু করল ম্যাচের রূপ। প্রথম বলে ফিফটি বুঝে নিলেন চার্লস। আর দুই ব্যাটসম্যান দুই ছক্কায় নিলেন ১৭ রান।
সে যে শুরু হলো, ঝড় আর থামল না। পুরো টুর্নামেন্টে ঘুমিয়ে থাকা চার্লস ৫ ম্যাচে করেছিলেন ৩৮ রান। সেই চার্লস ৯ চার ও ৭ ছক্কায় তুললেন ১০৫! সেঞ্চুরি হচ্ছিলই না যে বিপিএলে, সর্বশেষ তিন ম্যাচে দেখা গেল তিন সেঞ্চুরি!
ঘুম ভাঙা আরেকজন ম্যাককালাম অবশ্য চার মারায় কোনো আগ্রহ দেখাননি। আল আমিন হোসেন ও ক্রেমারকে বেধড়ক পিটিয়ে ৯ ছক্কায় সাজিয়েছেন ইনিংস। সঙ্গে এক চারে ৪৬ বলে ৭৮ রান করে তবেই থেমেছেন। পুরো টুর্নামেন্টে যে ঝড় দেখাতে পারেননি বলে এত কথা, সেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচেই দেখালেন ম্যাককালাম।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৫১ রান তুলে হাসান আলীর দুর্দান্ত ১৯তম ওভারের শেষ বলে আউট হয়েছেন এই কিউয়ি। শেষ ওভারের তিন চারে চার্লস শুধু সেঞ্চুরিই পাননি, দলকে এনে দিয়েছেন প্রায় দুই শ (১৯২) ছোঁয়া স্কোর। শেষ ১১ ওভারে ১৩১ রান তুলেছে রংপুর!
তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারে চার-ছক্কা মেরে আশা দেখিয়েছিলেন লিটন দাশ। আম্পায়ারের ভুলে জীবন পাওয়া তামিম ইকবাল ঝড়ের ইঙ্গিত দিয়েও পারেননি। ১৯ বলে ৩৬ রান করে আউট হয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজার বলে। ইমরুল কায়েস চেহারা দেখিয়েই (০) ফিরে গেছেন। শোয়েব মালিক ও প্রশ্ন তোলার মতো এক ইনিংস খেলেছেন (১৪ বলে ১০)। এরই ধারাবাহিকতায় এক শ পেরোনোর আগে বিদায় নিয়েছেন লিটনও (৩৯ রান)।
ছয়ে নেমে জশ বাটলার যা একটু চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর ১৬ বলে ২৬ রান প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম হয়ে গেছে। বিশেষ করে মারলন স্যামুয়েলসের প্রশ্নবিদ্ধ ব্যাটিং (৩০ বলে ২৭ রান) কুমিল্লার হতাশা বাড়িয়েছে।
কুমিল্লার হতাশা আরও বেশি হতে পারে। গ্রুপ পর্বে সেরা দল ছিল তারা। কাল টুর্নামেন্টের মাঝপথে নিয়ম বদলে না গেলে ফাইনালে উঠে যেত তারা। এ নিয়ে ক্ষোভ আছে কুমিল্লার মধ্যে। দলটির অন্যতম মালিক নাফিসা কামাল নিজের সেই ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। ফাইনালে রাখা পা-টাই আজ পিছলে হড়কে গেল।
রংপুর অবশ্য দাবি করতে পারে, আমরা তো ক্রিকেট খেলেই জিতেছি। খেলায় সেরা দলটাই গেছে ফাইনালে। রংপুরের এখন নিজেকে কালকের ফাইনালে সেরা প্রমাণ করারও পালা। যেখানে ঢাকার সামনে থাকল বাড়তি বিশ্রাম পাওয়ার সুবিধাটুকুও। ২০-২০ ওভারের ম্যাচ দুই দিনে শেষ হওয়ার মাঝখানে এতসব নাটক আর অনিশ্চয়তা মুছে তরতাজা হওয়ার যথেষ্ট সময়ও রংপুর পাচ্ছে না।
সূত্রঃ প্রথম আলো
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com