পৌষের শেষের দিকে কনকনে ঠাণ্ডা ও হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে ভারত সীমান্তবর্তী জেলা কুমিল্লার মানুষ। সুর্যের দেখা না মেলায় কুয়াশায় ঢেকে রয়েছে প্রকৃতি।
বৃহস্পতিবার (৫ জানুয়ারি) দিনভর জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নিচে। তবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শীতের মাত্রা কমতে পারে বলে জানান কুমিল্লা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ মোহাম্মদ ইসমাইল ভূইয়া।
শীতে কুমিল্লা নগরীসহ ১৭ উপজেলায় দুর্ভোগে পড়েছেন হতদরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ। গরম কাপড়ের অভাবে কষ্টে পাচ্ছে তারা। কনকনে ঠাণ্ডা উপেক্ষা করে কাজে বের হতে পারছেন না শ্রমজীবী মানুষ। এ অবস্থায় তারা স্থানীয় প্রশাসন ও সরকারের সহযোগিতা চেয়েছে।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কটক বাজারের চা দোকানদার আব্দুল মান্নান বলেন, ‘কয়েক দিন ধরে বেশ ঠাণ্ডা। জীবনের তাগিদে দোকান খুলতে হলো। তবে তেমন কাস্টমার নেই। এভাবে চললে জীবন চালানো কষ্টকর হবে। এছাড়া ঋণ পরিশোধের কিস্তির কারণে দোকান খুলতে বাধ্য হয়েছি।’
নগরীর দক্ষিণ চর্থা এলাকার রিকশাচালক মাসুদুর রহমান বলেন, ‘ঠাণ্ডার মধ্যে রিকশা নিয়ে বেরিয়েছি। দিনে আনি দিনে খাই। আজ রাস্তাঘাটে মানুষ খুব কম। এভাবে দিন চললে আমরা কীভাবে চলবো? দুপুর পেরিয়ে বিকাল হচ্ছে, সারা দিনে ৭০ টাকা রোজগার হয়েছে। রাতে রিকশার মালিককে ২০০ টাকা দিতে হবে।’
নগরীর ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী তানিয়া আক্তার বলেন, ‘সকাল সকাল কলেজে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হয়েছি। কুয়াশা ও বাইরে ঠান্ডা থাকার কারণে সহপাঠীরা আসেনি বলে ক্লাস হয়নি। তাই ক্লাস না করে বাড়ি চলে যাচ্ছি।’
ঠান্ডায় জেলার বেড়েছে শীতজনিত রোগ ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট। আক্রান্তদের মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, শীত বেড়ে যাওয়ায় রোগীর চাপও অনেক বেড়ে গেছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে। শীতকালীন সরকারি ওষুধ চাহিদার তুলনায় বেশি রয়েছে।
কুমিল্লা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শাহাদাৎ হোসেন বলেন, জেলার ১৭টি উপজেলায় শীতার্ত মানুষের জন্য সরকারিভাবে ১০ হাজার কম্বল দেওয়া হয়েছে। যা উপজেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিতরণ করা হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার থেকে সব উপজেলায় কম্বল বিতরণ করা হবে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com