মাস কয়েক আগে পরিবারের পছন্দে রবিন হোসেন শান্তকে (২৩) বিয়ে করানো হয়। আগামী কোরবানি ঈদের পর বড় অনুষ্ঠান করে তার স্ত্রীকে তুলে আনার কথা ছিল। অথচ এর আগেই না-ফেরার দেশে চলে গেলেন শান্ত। গুলিস্তান সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনায় রবিনের মৃত্যু হয়। নিহত রবিনকে গত বুধবার রাতে শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার পূর্ব নাগেরপাড়া গ্রামে দাফন করা হয়।
বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নিহত শান্তের বাবা সোহরাব সরদার বলেন, ‘আমরা বুড়া-বুড়ি কখন যে মরে যাই তা কি বলতে পারি। তাই ছেলের বউ দেখব বলে ৫ মাস আগে তাকে বিয়ে দিয়েছিলাম। কিন্তু অভাবের সংসারে অনুষ্ঠান করতে পারিনি, তাই এখনও পোলা বউরে বাড়িতে নাইয়র (ওঠানো) আনা হয় নাই। ছেলের দোকানমালিক বলেছিলেন, রমজানের ঈদের পরে শান্তর বেতন বাড়াবে। আশা ছিল, কোরবানির ঈদের পর গ্রামের মুরব্বিদের নিয়ে লাল শাড়ি পরাইয়া বউ আনব। কিন্তু তা আর হলো না। নতুন বউ আইলো স্বামীরে দাফন করতে।’
তিনি বলেন, ‘একটা মাত্র ছেলে ছিল আমার। অনেক কষ্টে ছেলেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করিয়েছিলাম। দুই বছর আগে আমার ব্রেইন স্ট্রোক হয়। পরে সে পড়াশোনা ছেড়ে রাজধানীর সিদ্দিক বাজারে একটি সিরামিকের দোকানে কাজ শুরু করে। তার ৭ হাজার টাকা বেতনের চাকরিতে আমাদের সংসার চলছিল। ওর টাকায় আমাদের ওষুধ কিনতে হতো। এখন কে আমাকে ওষুধ কিনে দেবে? কে আমাদের মুখে খাবার দেবে?’
নিহত রবিন হোসেন শান্তর মা তাসলিমা বলেন, ‘আমি এখন ছেলের বউকে কী করব? আমার তো আরেকটা ছেলেও নেই, যে তার সঙ্গে বিয়ে দেব।’
শান্তর স্ত্রী জিয়াসমিন বলেন, ‘আমি স্বামীর ঘর করার আগেই বিধবা হইলাম। আমি এখন কী করব? আমার কী হইব? আমার শ্বশুর বৃদ্ধ মানুষ, তিনি নিজেই এখন খেতে পাবেন না, আমাকে খাওয়াবেন কোথা থেকে?’
নিহত রবিন হোসেন শান্ত (২৩) নারায়ণগঞ্জের সরকারি তোলারাম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজারের একটি সিরামিকের দোকানে চাকরি করতেন।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com