শুভ জন্মদিন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
কুমিল্লা শহর থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দূরে লালমাটি আর সবুজের অরণ্যের মাঝে এক উচ্চ পাঠশালা। প্রতিদিন লাল-নীল বাসে ক্যাম্পাসমুখী হাজারো শিক্ষার্থী। লালমাটির ছোট ছোট টিলার চূড়ায় দাঁড়িয়ে আছে সুবিশাল ভবনগুলো। প্রধান ফটক পেরিয়ে দেখা মিলে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যসহ কত কী। হাঁটতে হাঁটতে ক্যাম্পাসের শেষ পর্যায়ে দেখা মিলে সবুজ গাছগাছালির মাঝে শহিদের স¥রণে দাঁড়িয়ে আছে দুই স্তম্ভবিশিষ্ট শহিদ মিনার। সড়কজুড়ে রক্তঝরা কৃষ্ণচূড়া, দুই ধারে সাদা-হলুদ-বেগুনি রঙের ফুল। এমন বৈচিত্র্যপূর্ণ দৃশ্যের দেখা মিলবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
দেশের প্রাচীন শহর কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ের পাদদেশে ২০০৬ সালের ২৮ মে প্রতিষ্ঠিত হয় কুমিল্লাবিশ্ববিদ্যালয়। যেখানে শিক্ষার্থীদের ঘুম ভাঙে রং-বেরঙের গাছগাছালি আর পাখির ডাকে। সবুজ ঘাস আর লালমাটির ছোঁয়ায় পড়াশোনা করে তারা। ক্যাম্পাসটি সাজে কৃষ্ণচূড়া, জারুল কিংবা কাশফুলে। দলভেদে ক্যাম্পাসে চলে আড্ডা আর খুনশুটির কত গল্প। লালমাটির গহ্বরের ৫০ একরের ক্যাম্পাসটির ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। দেড় যুগের পথচলায় সংকট, অপূর্ণতার মাঝে নানা প্রত্যাশা-সম্ভাবনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মাত্র ৩০০ জন শিক্ষার্থী ও ১৫ জন শিক্ষক নিয়ে শুরু হওয়াবিশ্ববিদ্যালয়টিতে বর্তমানে ২৬৫ জন শিক্ষক ও ৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। ৫০ একর থেকে বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২৫০ একরে। গবেষণার মান বৃদ্ধি, অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নানা সাফল্যে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। সিভিল সার্ভিস, করপোরেটসহ সরকারি-বেসরকারি চাকরির বাজারে সাফল্য পেতে শুরু করেছে তারা।বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৬০০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্প স্বপ্ন দেখাচ্ছে নতুন দিগন্তের। ২০২৪ সালের শেষ দিকে প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এটি অন্যতম আকর্ষণীয় ক্যাম্পাস হবে বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা: বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা নতুন নতুন উদ্ভাবন, গবেষণা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে প্রিয় শিক্ষাঙ্গন এগিয়ে যাবে। এ জন্য প্রয়োজন সুষ্ঠু শৃঙ্খলাপূর্ণ শিক্ষার পরিবেশ, রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত ক্লাসরুম। যেখানে সব মতাদর্শের শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে পারবে। এ ছাড়া যে যে সংকট বিদ্যমান তা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া।
শিক্ষকদের প্রত্যাশা: বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার প্রতি মনোযোগ দিতে হলে প্রয়োজন ফান্ড। সেদিকে নজর দিতে হবে প্রশাসনকে। এ ছাড়া সংকটগুলো নিরসন জরুরি। সেটা রাজনৈতিক সংকট, আবাসন সংকট হোক বা যেকোনো সংকট। শিক্ষা ও গবেষণার সুষ্ঠু পরিবেশ থাকলে সম্ভাবনাময় কুমিল্লাবিশ্ববিদ্যালয়বিশ্ব র্যাঙ্কিং এ জায়গা করে নিতে পারবে।
উপাচার্যের কথা: উপাচার্য অধ্যাপক ড. এএফএম আবদুল মঈন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমাদের সবার এইবিশ্ববিদ্যালয়।বিশ্ববিদ্যালয়কে সবার নিজের বলে ভাবা উচিত।বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিশন পূর্ণ করতে ও ইমেজ বাড়াতে আমাদের সবাইকে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ থাকতে হবে, দায়িত্বশীল হতে হবে। আমাদের একটাই লক্ষ্যবিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেজ বৃদ্ধি করা এবং সে জন্য আমরা ভিশন অনুযায়ী কাজ করছি।