কুমিল্লায় জীবিত নারীকে মৃত দেখিয়ে জালিয়াতির অভিযোগ
কুমিল্লার চান্দিনায় জীবিত নারীকে মৃত দেখিয়ে বয়স্ক ভাতার কার্ড জালিয়াতি করে আরেকজনের নাম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের জিরুআইশ গ্রামে।
ভুক্তভোগী নারীর নাম খায়রন বিবি। তিনি জিরুআইশ গ্রামের মৃত আব্দুল মজিদের স্ত্রী। অভিযুক্ত ইউপি সদস্যের নাম মকবুল হোসেন ভুলু। তিনি মাইজখার ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য।
জানা যায়, জিরুআইশ গ্রামের দিনমজুর আব্দুল মজিদ ২০১৩ সালে মৃত্যু বরণ করায় ২০১৫ সালে তার স্ত্রী খায়রন বিবিকে ২০১৬ সাল থেকে বয়স্ক ভাতা দেওয়া হয়। ২০২২ সালে ওই ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে মকবুল হোসেন ভুলু ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। ইউপি সদস্য হওয়ার পর অভিযুক্ত ভুলু খায়রন বিবিকে মৃত দেখিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ভুয়া মৃত্যু সনদ তৈরি করেন। পরে খায়রন বিবির স্থলে নতুন ভাতাভোগী হিসেবে একই গ্রামের ছালেহা বেগমের নাম যুক্ত করার জন্য উপজেলা সমাজসেবা কার্যালয়ে পাঠানো হয়। সেই মোতাবেক উপজেলা সমাজসেবা দপ্তর খায়রুন বিবির পরিবর্তে মোসা. ছালেহা বেগমের নাম অন্তর্ভুক্ত করে এক বছর যাবৎ ভাতা প্রদান করছে।
ভুক্তভোগী খায়রন বিবি বলেন, ঘর ছাড়া আর কোনো জায়গা-জমি নাই। একটা ছেলে অন্যের কৃষি জমিতে কাজ করে। তারও দুই সন্তান। খুব কষ্টে আছি। এক বছর আগে আমাদের গ্রামের সাদেক নামের এক ছেলে ভুলু মেম্বারের কথা বলে সবার কাছ থেকে ১০০ টাকা করে নেয়। তারপর থেকে আমার মোবাইলে আর টাকা আসে না। আমি কত মানুষের কাছে গেছি কেউ কিছু বলতে পারেনা। পরে জানতে পারছি আমি নাকি মইরা গেছি!
ইউপি সদস্য মকবুল হোসেন ভুলু বলেন, সাদেক জানিয়েছে খায়রন বিবি মারা গেছে এবং পাশের বাড়ির ছালেহা বেগমের নাম যুক্ত করে দিতে। আমি সাদেক এর কথামতো করে দিয়েছি।
মাইজখার ইউপি চেয়ারম্যান শাহ্ সেলিম প্রধান বলেন, উপজেলার মধ্যে আমার ইউনিয়ন অনেক বড়। যে কারণে সবাইকে চেনা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। আমি ওয়ার্ড মেম্বারের সুপারিশেই মৃত্যু সনদ দিয়েছি এবং নতুন ভাতাভোগীর নাম প্রস্তাব করেছি।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাছিমা আক্তার বলেন, আমার উপজেলায় অনেক ভাতাভোগী। আমার পক্ষে সবার খোঁজ রাখা সম্ভব নয়। চেয়ারম্যান থেকে যেভাবে কাগজ পেয়েছি ঠিক সেভাবেই কাজ করেছি।
চান্দিনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস শীল বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজখবর নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হবে।