পানির অতিরিক্ত চাপে ছিন্নভিন্ন হয় সাবমেরিন, সবাই নিহত: মার্কিন কোস্টগার্ড

অবশেষে নিশ্চিত হওয়া গেল আটলান্টিকের তলদেশে হারিয়ে যাওয়া সাবমেরিন টাইটানের পরিণতি। মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, সমুদ্রের তলদেশে পানির চাপ নিতে পারেনি সাবমার্সিবল টাইটান। এর ফলে সেখানে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে সেটি। এতে থাকা পাঁচ জনের কেউই বেঁচে নেই। সমুদ্রের তলদেশে পাওয়া ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করে মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, চাপ চেম্বারের বিপর্যয়ের কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে টাইটান।

যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে মার্কিন কোস্টগার্ডের সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাগার বলেন যে, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের প্রায় ১৬০০ ফুট দূরে টাইটানের লেজের অংশ পাওয়া গেছে। এর কাছাকাছি মিলেছে অন্যান্য অংশ। তিনি বলেন, বিশেষজ্ঞরা ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করেছেন। এরই মধ্যে যাত্রীদের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে। মাগার বলেন যে, আমরা কেবল কল্পনা করতে পারি যে এটি তাদের জন্য কতটা ভয়াবহ ছিল। আবিষ্কারটি কঠিন সময়ে কিছুটা হলেও সান্ত্বনা প্রদান করবে।

মার্কিন কোস্টগার্ড কর্মকর্তা বলেন যে, নিখোঁজ সাবমার্সিবলের ধ্বংসাবশেষ আবিষ্কারের পর দূরবর্তী চালিত যানগুলো ঘটনাস্থলে থাকবে এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকবে। ইউএস কোস্টগার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার টাইটান সাবমার্সিবল অনুসন্ধানে সহায়তা করার জন্য বিশেষজ্ঞ এবং সংস্থাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘এই অত্যন্ত জটিল অনুসন্ধান অভিযানে জোরালো গতিতে অনুসন্ধান অত্যন্ত প্রশংসিত হয়েছে। সমুদ্রের তলদেশে অনুসন্ধান ও উদ্ধারে বিশেষজ্ঞদের দ্রুত সংগঠিত করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। আমরা সব সংস্থা এবং কর্মীদের ধন্যবাদ জানাই।’ মার্কিন কোস্টগার্ড বলছে, কর্মকর্তারা সাবমেরিনের ব্যর্থতার কারণ নিয়ে গবেষণা করছে। এটি অবিশ্বাস্যরকম জটিল। এর জন্য নির্দিষ্ট সময় লাগবে।

তিনি বলেছিলেন যে, অনুসন্ধানকারী যানগুলো ‘অত্যন্ত দক্ষ’ এবং আরও তথ্য প্রকাশ করবে। মিলেছে টাইটানের পাঁচ টুকরা মার্কিন কোস্টগার্ড জানিয়েছে, অনুসন্ধানে পাঁচটি ধ্বংসাবশেষের টুকরা পাওয়া গিয়েছিল। সেগুলো টাইটানকে খুঁজে পেতে সাহায্য করেছে। রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেন, প্রেসার হুলের বাইরে অবস্থিত নাকের শঙ্কুটি প্রথম পাওয়া টুকরো। তারপর, তারা একটি বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের ক্ষেত্র’ খুঁজে পেয়েছিল।

ক্রুরা প্রথমটির মধ্যে একটি দ্বিতীয়, ছোট ধ্বংসাবশেষ ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিল, যেখানে চাপের হুলের অন্য প্রান্তটি অবস্থিত ছিল। তিনি বলেন, আমরা সেখানে যা আছে তা সম্পূর্ণরূপে ম্যাপ করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করব। মৃতদেহের সন্ধান অব্যাহত থাকবে। মৃতদেহের সন্ধান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন কোস্টগার্ড। তবে সেটি এমন পরিবেশে অত্যান্ত চ্যালেঞ্জিং এবং পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

ইউএস কোস্ট গার্ড রিয়ার অ্যাড. জন মাগার বলেছেন, নিখোঁজ টাইটানিক-বাউন্ড সাবমার্সিবলের আপাত বিস্ফোরণের পরে যাত্রীদের মৃতদেহের সন্ধান ও উদ্ধারের কাজ চ্যালেঞ্জিং। তবুও এটি অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, সমুদ্রের তলদেশ একটি অবিশ্বাস্যভাবে ক্ষমাহীন পরিবেশ। আমরা কাজ চালিয়ে যাব।

কিন্তু তাদের মরদেহ বা কোনোকিছু পাওয়া যাবে কি না- এমন সম্ভাবনার কোনো উত্তর নেই। গত রোববার কানাডার সময় সকাল ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টা) সাগরের নিচে যাত্রা শুরু করে সাবমেরিনটি। এর প্রায় সাড়ে চারদিন পর সাবমেরিনটির ধ্বংসাবশেষের খোঁজ মেলে।

আরো পড়ুন