গাছের ঘন পাতায় উঁকি দিয়ে আছে কাঁটাওয়ালা গোল গোল ফল। খুব মনোযোগ না দিলে একনজরে মনে হতে পারে কাঁঠাল। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে ফলটির নাম ‘রুটিফল’। কুমিল্লা কোটবাড়ীতে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড) ক্যাম্পাসের গাছে গাছে এই ফলটি নজর কাড়ছে দর্শনার্থীদের।
বার্ড কর্মকর্তারা জানান, রুটিফলের বৈজ্ঞানিক নাম Artocarpus communis। গ্রিক শব্দ আরটস ও কারপাসের সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে আরটোকারপাস শব্দটি। এর মধ্যে আরটস অর্থ রুটি, কারপাস অর্থ ফল। দুইয়ে মিলিয়ে Moracea পরিবারের সদস্য এই ফলের নামের বাংলা অর্থ হয় রুটিফল।
বার্ডে গিয়ে দেখা যায়, রুটিফল গাছের বাহারি পাতার অগ্রভাগ হাতের আঙুলের মতো চমৎকার নকশা করা। ফল দেখতে ঠিক কাঁঠালের মতো। এই ফল যারা খেয়েছেন, তারা বলছেন এর স্বাদ মিষ্টি আলু বা কলার মতো। অন্য ফলের সঙ্গে এর পার্থক্য হলো- রুটিফল পাউরুটির মতো স্লাইস করে আগুনে ঝলসে খেতে হয়। একটি রুটিফল গাছে ৫০ থেকে ৬৫ ফুট লম্বা হয়ে থাকে। ফল ধরে শাখার অগ্রভাগে।
বার্ডে প্রশিক্ষণ নিতে আসা আবদুস সামাদ বলেন, ‘আমি গাছটির নিচে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম এমন কাঁঠাল আগে দেখিনি। পরে পাশের একজন বললেন, এটি রুটিফল। জানলাম এটার স্বাদ ও গুণের কথা। ছবিও তুলে রেখেছি। তবে সরাসরি গাছ ও ফল দেখতে সুন্দর।’
বার্ডের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আশির দশকে বার্ডে প্রথম রুটিফল গাছ রোপণ করা হয়। এ গাছের ফল আগস্ট থেকে সেপ্টেম্বর মাসে সংগ্রহ করা হতো। ২০১৭ সালে গাছটি ঝড়ে পড়ে যায়। পরে সে বছরই তিনটি রুটিফলের চারা লাগানো হয়। এর মধ্যে একটি গাছে এবার ৩৫ থেকে ৪০টির মতো ফল এসেছে। রুটিফল দারুণ স্বাদের। এই ফল সবজি হিসেবেও অসাধারণ।’
কুমিল্লা গার্ডেনার্স সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ডা. মোহাম্মদ আবু নাঈম জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলের পাশে ও ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্বদ্যিালয়েও গাছটি রয়েছে। এই ফল স্বাদে ও গুণে অনন্য। সুষম খাদ্যের সব ধরনের উপাদান আছে। গাছের ঔষধি গুণাগুণ আছে। উচ্চ রক্তচাপ ও শ্বাসকষ্টের উপশম হিসেবেও এটি ব্যবহৃত হয়।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com