কুমিল্লার কয়েকটি গ্রামে যুগের পর যুগ তৈরি হচ্ছে বাটিক কাপড়। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আর ক্রেতার চাহিদার কথা ভেবে নিত্যনতুন ডিজাইন ফুটিয়ে তুলছেন কারিগররা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের পাশাপাশি বিদেশে রফতানি হচ্ছে এসব কাপড়। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হচ্ছে গ্রাম। তৈরি হচ্ছে নতুন কর্মসংস্থান।
বাটিকের গ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে কমলপুর। সদর উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ছোট্ট একটি গ্রাম। রঙে ও মানে টেকসই হওয়ায় এ গ্রামের বাটিকের রয়েছে বিশেষ সুনাম। এ ছাড়া যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ঐতিহ্যের এ বাটিক পোশাকে এসেছে নজরকাড়া সব নান্দনিক ডিজাইন। ক্রেতাদের কাছেও বাটিকের শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট ও বেডশিটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বছরে প্রায় ৪০-৪৫ কোটি টাকার পোশাক যাচ্ছে দেশ-বিদেশে।
সিল্কের ওপর বাটিক প্রিন্টের শাড়ি যেমন আকর্ষণীয় তেমনই সালোয়ার-কামিজ-ওড়নায় বাটিকের অনবদ্য কাজ পোশাকে আনে দৃষ্টিনন্দন মাধুর্য। এ ছাড়া রয়েছে বাটিকের আরামদায়ক ফতুয়া বা শার্ট। নতুন নতুন নকশা আর স্বল্পমূল্যের জন্য কুমিল্লার বাটিক বরাবরই ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তবে এখানেও ঢুকে পড়েছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই পোশাক কেনার আগে যাচাইয়ের পরামর্শ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের।
কমলপুরে লাল মিয়া নামের এক ব্যক্তির হাত ধরেই বাটিকের যাত্রা। ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরা রাজ্যে কাপড়ে মোম ও রঙ দিয়ে ব্লক তৈরির কাজ শেখেন তিনি। গ্রামে এসে ১৯৭৫ সালে তিনি তার ভাই মোহন মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাটিক তৈরি শুরু করেন ছোট্ট।
মোহন মিয়া জানান, বর্তমানে শুধু কমলপুরেই রয়েছে শাড়ি, লুঙ্গি, থ্রি-পিস, শার্ট ও বেডশিট তৈরির ১৫টির মতো কারখানা। তবে কমলপুরের বাটিক এখন কমলপুরেই সীমাবদ্ধ নেই। পাশের আনন্দপুর, গলিয়ারা, বিবির বাজার ও গোমতীর ওপারে ইটাল্লা গ্রামেও কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানায় হাজারের বেশি শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন কুমিল্লার উপমহাব্যবস্থাপক মুনতাসীর মামুন বলেন, কুমিল্লার ঐতিহ্যবাহী এ পোশাক শিল্পের প্রসার ও বিপণনে আমরা প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা করি এবং সহজ ঋণের ব্যবস্থা করেছি।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com