জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিশাত আহমেদ খান।গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিবের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে তথ্য গোপন করে ধানমন্ডি এলাকার একটি আবাসিক ফ্লাটের ভূয়া হেবা দলিল ও পরে নামজারী করার অভিযোগে বুধবার ভোরে রাজধানীর বনশ্রী থেকে তাকে গ্রেফতার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। এদিন দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করার পর আদালত কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলার বাদী ওই ফ্লাটের মালিক ও কুমিল্লা নগরীর রাজাপাড়া এলাকার বাসিন্দা লন্ডন প্রবাসী মিনহাজুর রহমান।
এদিকে মামলার অন্য আসামীরা হলেন,কুমিল্লা সদর দক্ষিণ রাজাপাড়া গ্রামের মৃত গাজীউল হক মজুমদারে ছেলে শহিদুল হক মজুমদার ওরফে স্বপন, ফাহমিদা জেবিন,হাজী মো:রবিউল আলম নবী,শুকুর আলী,মো:করিম,নুর মোহাম্মদ ওরফে নুর,মো:বুলবুল আহম্মেদ।
মামলার অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, নিশাত খান ২০২০ সালের ৫ জুলাই গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় (উন্নয়ন ও অধিশাখা) উপসচিব এস.এম নজরুল ইসলামের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে প্রবাসী মিনহাজুর রহমানের অনুপস্থিতিতে অন্যকে হাজির করে ভূয়া হেবা দলিলের কাগজপত্র সম্পন্ন করেন। পরবতীতে তথ্য গোপন করে ওই নেত্রী তার নিজের নামে ফ্লাটের নামজদারী করে ভাড়াটিয়াকে বের করে দিয়ে বাসা দখলে নেন। তবে ওই প্রবাসী দেশে ফিরে ফ্লাটের ভূমি কর দিতে গিয়ে বিষয়টি জানতে পেরে জ¦ালিয়াতির বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণাললের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন। এতে তদন্তে স্বাক্ষর জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগটি প্রমানিত হয়। পরে চলতি বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর একই বিভাগের যুগ্ম সচিব মুহাম্মদ ইকবাল হুসাইন স্বাক্ষরিত এক পত্রে প্রতারণার মাধ্যমে করা নিশাত খানের নামজারী বাতিলের জন্য সহকারী কমিশনার (ভূমি) ধানমন্ডি সার্কেলকে নির্দেশ দেয়া হয়। চলতি বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর প্রবাসী মিনহাজুর রহমান বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী নিশাত আহমেদ খানসহ তার ৫ সহযোগীর বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করার পর পুলিশ আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান শুরু করে।
মামলার বাদী মিনহাজুর রহমান বলেন, এর আগেও গত বছরের নারায়নগঞ্জের রুপগঞ্জ থানায় সাড়ে ৩০ শতাংশ জমির ভূয়া হেবা দলিলের মামলায় নিশাত আহমেদ গ্রেফতার হয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই কারাগারে যান। তিনি বলেন, নিশাত খানের বিরুদ্ধে প্রতারণা, কাবিন ও জন্ম নিবন্ধন জালিয়াতি, চুরি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, কুমিল্লা, চাপাইনবাবগঞ্জ ও নীলফামারি জেলায় বর্তমানে ১১টি মামলা চলমান আছে।
এদিকে ওই আওয়ামী লীগ নেত্রীর গ্রেফতারের বিষয়ে রাতে দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, মামলা, চার্জশিট, তদন্ত ও বিচার অনেক গুলি ধাপ রয়েছে। সে (নিশাত) যদি বিচারে দোষী প্রমানীত হয় তাহলে জেলা কমিটি দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।
তবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সাবেক এমপি অধ্যাপক জোবেদা খাতুন পারুল বলেন, নিশাত খানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগের শেষ নেই। প্রতারণার কারণে তাকে মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে ২০২১ সালে বহিস্কার করা হয়।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com