দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আর বাকি মাত্র এক সপ্তাহ। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে কুমিল্লা-৭ (চান্দিনা) আসনটিতে তত সহিংসতা বাড়ছে। শনিবার নৌকা ও ঈগল সমর্থকদের মধ্যে পৃথক হামলার ঘটনায় এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। পৃথক হামলায় উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন নেতাকর্মী আহত এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৪টি গাড়ি ভাঙচুর হয়।
শনিবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় উপজেলার গল্লাই ইউনিয়নের আবেদা নূর কমপ্লেক্সের সামনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কুমিল্লা উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. প্রাণ গোপাল দত্তের সমর্থকদের উপর হামলা চালায় ঈগল প্রতীকের সমর্থকরা। সাংবাদিকদের নিকট এমন অভিযোগ করেন ওই হামলায় আহত কাউছার আলম (৩০)। সে উপজেলার গল্লাই গ্রামের মৃত নজির আহমদের ছেলে। হামলার ঘটনায় আহত অপর ৫ জন হলেন- গল্লাই গ্রামের রোস্তম আলীর ছেলে মো. বাশার (৩৭), চেরাগ আলীর ছেলে হযরত আলী (৪৪), আলী আক্কাছ এর ছেলে স্বপন (৩৫), কংগাই গ্রামের মৃত ওসমান আলীর ছেলে মনির হোসেন (৪৫), ভাগুরাপাড়া গ্রামের মৃত আদম আলীর ছেলে সাবেক ইউপি মেম্বার কুরবান আলী (৬০)। স্থানীয়রা আহতদের চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
এর আগে সন্ধ্যা পৌনে ৬ টায় উপজেলা সদরের পৌর এলাকার ৭নং ওয়ার্ডের ছায়কোট মৃধা বাড়ী এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু’র গাড়ি বহরে হামলা করে নৌকা সমর্থকরা। এসময় ৪টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। তবে প্রার্থী ও তার গাড়ি অক্ষত রয়েছে।
হামলার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু সাংবাদিকদের জানান, ‘আমি বিভিন্ন জায়গায় পথসভা ও নেতৃবৃন্দদের সাথে দেখা করছিলাম। এতবারপুর থেকে ছায়কোটে ঢুকে মাগরিবের নামাজ পড়ি। ওখানকার সভাপতি আবু তাহের কাকার ঘর গত রাতে (২৯ ডিসেম্বর) যে হামলা হয়েছিল সেখানে যাই। পরে ফেরার পথে দেখি ওখানে নৌকার নির্বাচনী অফিসে অসংখ্য মাস্ক পরা অস্ত্রধারী ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। আমার গাড়ির পেছনের ৪টি গাড়ির ওপরে হামলা হয়।’
এদিকে গাড়ি বহরে হামলার পর অভিযোগ করতে থানায় যান স্বতন্ত্র প্রার্থী। খবর পেয়ে নৌকার সমর্থকরা থানা গেটের কাছে অবস্থান নেন এবং নৌকার স্লোগান দিতে থাকে। এসময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের থানা চত্বরে রেখে প্রধান ফটক বন্ধ করে দেয়।
গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় চান্দিনা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী মুনতাকিম আশরাফ টিটু। এতে তার ৩জন সমর্থক আহত হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আহতরা হলেন- গল্লাই গ্রামের মো. জুয়েল এর ছেলে মো. মনির (২০), আবুল কাশেম এর ছেলে মো. কামাল হোসেন (৩৭), নূর ইসলাম এর ছেলে মো. রিয়াদুল ইসলাম (২৪)।
অপরদিকে গল্লাইয়ে নৌকা সমর্থকদের উপর হামলার খবরে রাত ৯টায় থানার সামনে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল বের করে নৌকা সমর্থিত নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ লাঠি চার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে।
এব্যাপারে নৌকার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক চান্দিনা পৌর আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র মো. মফিজুল ইসলাম জানান, ঈগল মার্কার প্রার্থী তার নিজ ইউনিয়নে মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে আমাদের সমর্থক আওয়ামী লীগ তথা সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপরে অতর্কিত ভাবে হামলা দিয়ে প্রায় ১০-১২ জনকে আহত করে।
এ ব্যাপারে চান্দিনা থানার ওসি আহাম্মদ সনজুর মোরশেদ বলেন- ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অপর ঘটনার অভিযোগ এখনো পাইনি। তদন্ত চলছে।’
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com