মালয়েশিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় কুমিল্লার দুই জন নিহত

মালয়েশিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত কামাল হোসেন (২৩) ও দুলাল মিয়া (২৪) নামের দুই প্রবাসী যুবকের কুমিল্লার দেবিদ্বারে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। লাশ দেশে আসবে কবে তা এখনও স্বজনদের অজানা। দুই পরিবারে কান্নার আওয়াজে ভারি হয়ে উঠছে বাতাস।
Advertisement

ভাগ্য বদলাতে একই বাড়ির দুই চাচাতো ভাই প্রায় ১৮ মাস আগে একসঙ্গে মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। সেখানে কাজও করতেন তারা একসঙ্গে। তবে মৃত্যুও যে একসঙ্গে হবে তা হয়ত কোনদিনই ভাবেননি তারা।

৩ মার্চ মালয়েশিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হন ৩ প্রবাসী বাংলাদেশী। এদের মধ্যে দুজনই কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামের লিটন মেম্বারের বাড়ির।

সরেজমিনে মঙ্গলবার সকালে উপজেলার এলাহাবাদ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মালয়েশিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় নিহত দুই পরিবারে চলছে কান্নার রোল। পুরো এলাকাই শোকে স্তব্ধ হয়ে আছে। জীবিকার তাগিদে প্রায় ১৮ মাস পূর্বে ওই এলাকার শহিদ মিয়ার ছেলে কামাল হোসেন (২৩) ও হাবিবুর রহমানের ছেলে মো. দুলাল মিয়া (২৪) পারি দিয়েছেন মালয়েশিয়ায়। সেখানে গত ৩ মার্চ ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হয় তারা। পরিবার ও গ্রামবাসী অপেক্ষা করছেন মরদেহের জন্য। নিহত কামাল হোসেন চার ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট, ছুটিতে দেশে এসে বিয়ে করার কথা ছিলো তার। অপরদিকে দুলাল মিয়াও চার ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে সবার ছোট। দুলাল মিয়ার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে।

নিহত কামাল হোসেনের মা আনোয়ারা বেগম বার বার মুর্ছা যাচ্ছেন। তাকে ঘিরে ধরেছে এলাকাবাসী, তিনি শুধু তার আদরের সন্তানের লাশটি চায়। তার আর্তনাতে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

কামাল হোসেনের বাবা শহিদ মিয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার জীবনের সব স্বপ্ন ছিল তাকে ঘিরে। এই মর্মান্তিক মুত্যু সব শেষ করে দিল। আমার সন্তানের লাশটি চাই আর কিছু দরকার নেই আমার। প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি আমার সন্তানের লাশ যাতে দ্রুত দেশে আনার ব্যবস্থা করে দেন।

নিহত দুলাল মিয়ার স্ত্রী আকলিমা আক্তার কুমিল্লা ইপিজেডে চাকুরির সুবাদে শাশুরি আনোয়ারা বেগম এবং দুই মেয়েকে নিয়ে কুমিল্লা শহরেই থাকেন। তাই তাদের স্বাক্ষাত সম্ভব হয়নি। তবে বাড়িতে থাকা দুলাল মিয়ার ভাবি হাফেজা বেগম জানান, তারা দুলালের মৃত্যুর খবর পেয়েছেন। লাশ দেশে আনার জন্য তারা স্থানীয় নেতাদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদ।

আরো পড়ুন