ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় নামাজের ফতোয়া নিয়ে সংঘর্ষ, পুলিশসহ আহত ১৬
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের ভেতরে নামাজের ফতোয়া দেওয়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে দুই পক্ষের সংঘর্ষে পুলিশসহ অন্তত ১৬ জন আহত হয়েছেন। এ সময় মসজিদের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার চর চারতলা মোল্লাবাড়ি ও কিছকি বাড়ি গোষ্ঠীর মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। শনিবার (০৬ এপ্রিল) বিকালে বিষয়টি জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, চর চারতলা উত্তরপাড়া জামে মসজিদে ইমামতি করেন মোল্লাবাড়ির নেতা মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা। শুক্রবার এশা ও তারাবিহ নামাজ শেষে ইমামের অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু ফতোয়া সম্পর্কে মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান। এ নিয়ে মুসল্লিদের দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়। নামাজ শেষে মসজিদের বাইরে উভয় পক্ষ অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে পুলিশসহ অন্তত ১৬ জন আহত হন। সেইসঙ্গে মসজিদের দরজা-জানালা ভাঙচুর করা হয়।
এ ব্যাপারে মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা বলেন, ‘তারাবিহ নামাজ শেষে কিছকি বাড়ির নেতা ঠিকাদার শফিকুর রহমান দুই মিনিট কথা বলতে আমার অনুমতি চাইলে অনুমতি দিই। তিনি তার বক্তৃতায় এই মসজিদের কোনও মুসল্লির নামাজ হয় না ফতোয়া দিলে উপস্থিত মুসল্লিরা প্রতিবাদ জানান। এতে শফিকুল ইসলামের বাড়ির লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদসহ আমাদের বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা চালান। হামলায় আমাদের বাড়ির পাঁচ জন গুরুতর আহত হন।’
তবে ঠিকাদার শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘তারাবিহ নামাজ শেষে নিয়ম অনুযায়ী অনুমতি নিয়ে নামাজের কিছু জরুরি মাসআলার বিষয়ে ইমাম ও মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করি। নামাজের প্রয়োজনীয় তাসবিহ পাঠের জন্য রুকু, সিজদা ও দাঁড়ানোতে পর্যাপ্ত সময় দান ও কাতার সোজা করার গুরুত্বের বিষয়ে খেয়াল দিতে ইমামকে অনুরোধ করি। এতে ইমাম ও তার লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে মসজিদের ভেতরে আমাকে নাজেহাল করেন। পরে তারা আমার ও আমার এক ভাইয়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেন। আমার ব্যবহৃত গাড়ি ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন। তাদের হামলায় আমার বাড়ির আট জন আহত হন।’
মুসল্লি ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মসজিদের ইমাম মাওলানা মহিউদ্দিন মোল্লা স্থানীয় একটি আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ। মাদ্রাসার নামকরণ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। শুক্রবার মসজিদে মাসআলা সংক্রান্ত বিষয়টি একটি অজুহাতমাত্র। এ নিয়ে মূলত দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার ওসি নাহিদ আহম্মেদ বলেন, ‘সংঘর্ষ থামাতে ৩৫ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে পুলিশ। এ সময় তিন পুলিশ সদস্য আহত হন। ঘটনার পর থেকে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি, কোনও পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি।’