ভারতের আসামের বরাক উপত্যকার হোটেল মালিকেরা ঘোষণা করেছেন, যতক্ষণ প্রতিবেশী বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুর ওপর আক্রমণ না থামবে, ততক্ষণ তারা কোনো বাংলাদেশি নাগরিকের কাছে হোটেল ভাড়া দেবেন না।
শুক্রবার বরাক উপত্যকা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে।
বরাক উপত্যকা হোটেল ও রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি বাবুল রায় বলেন, বাংলাদেশে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুর অবস্থা উদ্বেগজনক। আমরা এটি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারি না। বাংলাদেশের জনগণকে অবশ্যই দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে। যদি পরিস্থিতি উন্নত হয়, তবে আমরা আমাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারি।
এর আগে বাংলাদেশে ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর নির্যাতনের দাবি করে প্রতিবাদে ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গ কয়েকটি জেলার হোটেল ব্যবসায়ীরাও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেন।
তার আগে, অল ত্রিপুরা হোটেল অ্যান্ড রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে সম্প্রতি ভারতের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং সংখ্যালঘু হিন্দুদের প্রতি একশ্রেণির উগ্রবাদী জনগণ তীব্র অত্যাচার করছে। আগেও হতো, কিন্তু এখনকার মতো নয়। বর্তমান পরিস্থিতি ভীষণ উদ্বেগের। আমাদের রাজ্যে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ থেকে আগত নাগরিকদের আমরা অতিথির সম্মান দিয়ে থাকি। সেখানে বাংলাদেশের একশ্রেণির নাগরিকদের সে দেশের সংখ্যালঘুদের প্রতি এমন আচরণ নিন্দনীয়। এই প্রেক্ষাপটে অল ত্রিপুরা হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ২ ডিসেম্বর থেকে সাময়িকভাবে আমাদের রাজ্যে আগত বাংলাদেশি নাগরিকদের কোনো পরিষেবা না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
সম্প্রতি ত্রিপুরার আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায় হিন্দু সংঘর্ষ সমিতি নামে একটি সংগঠনের সদস্যরা। সেখানে বাংলাদেশের পতাকা নামিয়ে তাতে আগুন দেয় তারা। পরে এ ঘটনাকে ‘দুঃখজনক’ উল্লেখ করে বিবৃতি দেয় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, এ ঘটনায় বাংলাদেশ ‘গভীরভাবে ক্ষুব্ধ’।
গত মাসের মাঝামাঝি ঢাকার বিমানবন্দরে সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার এবং পরদিন তাকে আদালতে হাজির করার পর চট্টগ্রামে সহিংসতায় আইনজীবীর প্রাণহানির পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হয়। দুই দেশই পরস্পরের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ করেছে।
গত ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতন এবং তার ভারতে চলে যাওয়ার পর থেকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কের জটিলতা বাড়তে থাকে। বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া সাময়িক বন্ধ রাখে ভারত। এর পর থেকে দেশটিতে বাংলাদেশি রোগী ও পর্যটকের সংখ্যা কমতে থাকে।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com