রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষায় সব বিষয়ে ন্যূনতম ৮০ নম্বর পেতে হবে—এমন নিয়ম বাধ্যতামূলক করেছে কর্তৃপক্ষ। এই শর্ত পূরণে ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীদের ট্রান্সফার সার্টিফিকেট (টিসি) দিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেওয়া হবে। বছরের শুরুতেই এ বিষয়ে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করতে অভিভাবকদের বাধ্য করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের পুরো বছরের বেতন এককালীন পরিশোধের জন্যও চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। পাশাপাশি নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা কে বিজ্ঞান বিভাগ নিতে পারবে, সে সিদ্ধান্তও নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এমন নিয়মে ক্ষুব্ধ অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা সম্প্রতি বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন।
অভিভাবকরা দাবি করেছেন, নতুন কারিকুলাম থেকে পুরোনো কারিকুলামে ফিরে যাওয়ায় পর্যাপ্ত প্রস্তুতির সুযোগ পাননি শিক্ষার্থীরা। এনসিটিবি যেখানে তিন বিষয়ে ফেল করলেও পরবর্তী শ্রেণিতে উন্নীত করার নির্দেশনা দিয়েছে, সেখানে রাজউক কর্তৃপক্ষ সেটি মানছে না।
রাজউক কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. এনামুল ইসলাম দাবি করেছেন, এই নিয়ম নতুন কিছু নয়, আগেও ছিল। তিনি বলেন, আমরা খুব সীমিত সংখ্যক শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারি। যারা ভালো ফল করছে না, তাদের ধরে রাখার সুযোগ আমাদের নেই। অভিভাবকদেরও সন্তানদের ভালো করতে উৎসাহ দিতে হবে, তাই অঙ্গীকারনামা নেওয়া হচ্ছে।
পুরো বছরের বেতন অগ্রিম নেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অনেক শিক্ষার্থী গোপনে প্রতিষ্ঠান ছেড়ে চলে যায়, ফলে বেতন বকেয়া থেকে যায়। দুর্বল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অধ্যক্ষ আরও বলেন, আমাদের কলেজের সাফল্য ধরে রাখতেই নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলতে হবে। যারা ভালো করবে না, তাদের বিজ্ঞান বিভাগে সুযোগ দেওয়া হলে ফলাফল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
নবম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মা বলেন, হঠাৎ কারিকুলাম পরিবর্তনের কারণে প্রস্তুতি নিতে পারেনি শিক্ষার্থীরা। ফলে ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় খারাপ হয়েছে। কিন্তু সরকার যেখানে নমনীয় নীতি গ্রহণ করেছে, সেখানে রাজউক কর্তৃপক্ষ আরও কঠোর হচ্ছে।
এক শিক্ষার্থীর বাবা বলেন, আমার ছেলে সব বিষয়ে ভালো করলেও একটি বিষয়ে কম নম্বর পেয়েছে, তাই বিজ্ঞান বিভাগে পড়তে দিচ্ছে না। আমরা সন্তানের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবো, কর্তৃপক্ষ নয়।
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এ নিয়মের কারণে তাদের ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। নিয়ম শিথিলের দাবিতে তারা একাধিকবার বিক্ষোভ করলেও কর্তৃপক্ষ অনড় অবস্থানে রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা আরও বলছেন, দ্রুত এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন, যাতে তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেন। অভিভাবকরা চান, পরীক্ষায় নম্বরের চেয়ে শিক্ষার মানোন্নয়নের দিকে কর্তৃপক্ষ মনোযোগ দিক।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com