রিকশাচালককে জুতাপেটা করা সেই সরকারি চাকরিজীবী বরখাস্ত

রিকশাচালককে জুতাপেটা করা রাজশাহীর পবা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা জাহিদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার। আজ সোমবার (সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন-৫ (প্রশাসন ও শৃঙ্খলা) শাখার এক প্রজ্ঞাপনে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সচিব ড. মো. মহিউদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, রিকশাচালককে নির্দয়ভাবে প্রহার করার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়েছে।
এ ধরনের আচরণ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় ও সমাজকল্যাণ অধিদপ্তরের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন করেছে। সরকারি কর্মচারী হিসেবে তার এ ধরনের আচরণ অশোভনীয়, অসংগত, চাকরি শৃঙ্খলা পরিপন্থি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই সরকারি চাকরি আইন ও সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা অনুযায়ী তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। জাহিদ হাসান বিধি মোতাবেক খোরপোশ ভাতা প্রাপ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার রিকশাচালককে জুতাপেটা করার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, কোয়ার্টারের সামনে জাহিদ হাসান এক রিকশাচালককে পায়ের জুতা খুলে পেটান। পরে প্রাইভেটকারের ব্যাকডালা থেকে লাঠি বের করে রিকশাচালকের শরীরে ও রিকশায় আঘাত করেন তিনি। এ ছাড়া অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজও করেন।
পরের দিন শনিবার রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার এক চিঠিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মনিরা খাতুন ও পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরাফাত আমান আজিজকে তদন্তের নির্দেশ দেন। তাদের আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এই তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই জাহিদ হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করল মন্ত্রণালয়।
এই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় আজ সোমবার পর্যন্ত দুই দিন ছুটি নেন জাহিদ। এর আগে গতকাল রবিবার নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস তিনি তাতে লেখেন, ‘এমন ঘটনা কি আর কারও জীবনে ঘটেনি? আমি অন্যায় করেছি। কিন্তু এত বড় শাস্তি কি আমার পাওনা ছিল?’ এ ছাড়া পোস্টে তিনি অনুতপ্ত জানিয়ে ক্ষমাও চান।