সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। প্রস্তাবিত সংশোধনী অনুযায়ী, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি বা দাপ্তরিক কাজে বিঘ্ন ঘটালে তদন্ত ছাড়াই আট দিনের নোটিশে সরকারি কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা যাবে।
এই সংশোধনের অনুরোধ এসেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০১৮ সালে বাতিল হওয়া ‘সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ, ১৯৭৯’-এর কঠোর শর্তগুলো আংশিকভাবে ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব করা হয়েছে। খসড়াটি প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদনের পর মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন হবে।
তিন ধরনের শাস্তির প্রস্তাব
সংশোধনীতে তিনটি শাস্তির ধারা রয়েছে:
চাকরিচ্যুতি
চাকরি থেকে অব্যাহতি
পদাবনতি বা বেতন কর্তন
এই শাস্তিগুলো প্রয়োগ করা যাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিতি, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি, সহকর্মীকে কাজে বাধা দেওয়ার মতো অপরাধে।
শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া
অভিযোগের জবাব দিতে দুই থেকে পাঁচ দিন সময় দেওয়া হবে। জবাব সন্তোষজনক না হলে তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর সুযোগ দেওয়া হবে। তাতেও সঠিক ব্যাখ্যা না পেলে চূড়ান্ত শাস্তি দেওয়া হবে। তবে শাস্তির বিরুদ্ধে সাত দিনের মধ্যে আপিল করা যাবে, যা রাষ্ট্রপতির কাছে গেলে তা চূড়ান্ত বলে গণ্য হবে।
বিশ্লেষকদের মত
জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ আব্দুল আওয়াল মজুমদার বলেন, “বর্তমান প্রশাসনিক পরিস্থিতিতে এই ধরনের আইনের প্রয়োজন আছে।” অন্যদিকে, সাবেক সচিব ফিরোজ মিয়া বলেন, “সরকারি কর্মচারীদের অশৃঙ্খল আচরণই এই আইনের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছে।”
তবে সমালোচকরা বলছেন, এই ধরনের আইন চিন্তার স্বাধীনতা এবং সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী হতে পারে। এক যুগ্ম-সচিব মন্তব্য করেন, “আইনের শাসনের পক্ষে থাকা সরকার কেন কালো আইন ফিরিয়ে আনছে?”
পটভূমি
জুলাই-আগস্টে কিছু সরকারি কর্মচারীর অনুপস্থিতি, সচিবালয়ে বিশৃঙ্খলা এবং আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই আইন সংশোধনের চিন্তা এসেছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, অনুপস্থিত ১৮৭ জন পুলিশ সদস্য এখনও কাজে ফেরেননি। সরকারের বক্তব্য, ২৫ বছর পূর্ণ না হওয়া কর্মচারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিদ্যমান আইনি কাঠামো যথেষ্ট নয়।
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com