টয়লেটের ফ্লাশ নষ্ট থাকায় হোটেল ম্যানেজারকে পেটালেন যুবদল সভাপতি মুন্না!

খুলনাতে তারুণ্যের সমাবেশ উপলক্ষে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না হোটেল ক্যাসল সালামের ম্যানেজারকে পিটিয়েছে জানিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন ফ্রান্স বিএনপি নেতা মীর জাহান। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলোঃ
“খুলনাতে তারুণ্যের সমাবেশ উপলক্ষে যুবদলের সভাপতি মোনায়েম মুন্না হোটেল ক্যাসল সালাম এর ৫০১ নম্বর রুমে অবস্থান করছিলেন। উনার রুমের টয়লেটের ফ্লাশ কাজ করছিল না। উনি ফ্রন্টডেস্ক এ কল করে বিষয়টি জানালে তারা সাথে সাথে মেইন্টেনেন্স টিমের একজন টেকনিশিয়ান কে পাঠান। টেকনিশিয়ান উনার রুমে আসলে তিনি বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী নিয়ে মিটিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন এবং টেকনিশিয়ান কে বললেন “এখন মিটিং চলছে, পরে আসেন”। জনাব মোনায়েম মুন্না হোটেল কর্তৃপক্ষকে আগে থেকে বলে রেখেছেন, তিনি রুমে না থাকলে কেউ তার রুমে প্রবেশ করতে পারবে না। টেকনিশিয়ানরা যখনই আসেন তখনই উনি মিটিংয়ে ব্যস্ত আবার উনি যখন রুমে থাকেন না তখন ভিতরে কাজ করতে পারেন না। গত শুক্রবার ১৬/০৫/২০২৫ উনি জুম্মার নামাজ পড়তে যাওয়ার আগে ফ্রন্ট ডেস্কের লোকজনদেরকে বলেন “আমি নামাজ পড়তে যাচ্ছি, এর মধ্যে টয়লেটের ফ্লাশ ঠিক করে ফেলেন।” নামাজ শেষ করে উনি রুমে এসে দেখেন তার টয়লেটের ফ্লাশটি এখনো ঠিক হয়নি। উনি হোটেলের ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজার জনাব খালেদকে রুমে আসতে বলেন। খালেদ সাহেব যখন রুমে আসেন তখন মুন্না সাহেবের রুমে আরো তিনজন অবস্থান করছিলেন, একজনের নাম ওমর ফারুক যিনি উনার সফর সঙ্গী এবং একই হোটেলের ৫০৩ নম্বর রুমে অবস্থান করছিলেন, উনার এ পি এস ফুয়াদ এবং খুলনা জেলা যুবদলের সভাপতি রুবায়েত।
খালেদ সাহেবকে উনি টয়লেটের ফ্লাশ ঠিক করার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে জবাবে খালেদ সাহেব বলেন “স্যার, আজকে জুম্মার দিন, আমাদের টেকনিশিয়ানরাও নামাজ পড়তে গেছে তাই ঠিক করা হয়নি, কিন্তু এখন টেকনিশিয়ানরা এসে গিয়েছে, তারা এসে ঠিক করে দিচ্ছে”। জনাব খালেদের এ উত্তর মোনায়েম মুন্নার পছন্দ হয়নি এবং স্বভাবগত বদমেজাজি হবার কারণে তিনি খালেদ সাহেবের মুখে ঘুষি মেরে বসেন যাতে তার চোখের চশমা ভেঙে যায়। উনি ঘুষি মারার সাথেসাথে রুমে অবস্থিত অন্য তিনজনও তার উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন। মার খেয়ে খালেদ সাহেব রুম থেকে বের হয়ে গেলে মোনায়েম মুন্না হাউসকিপার হাফিজকে ডাকেন। হাফিজ তার সাথে একজন টেকনিশিয়ান নাম কামরুল এবং হোটেলের রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার জনাব আখতার কে নিয়ে তার রুমে আসেন। তাদেরকেও তিনি একইভাবে জেরা করতে থাকেন এবং একপর্যায়ে রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার জনাব আক্তারের কানে আঘাত করেন যার ফলে তার কান দিয়ে রক্ত বের হতে থাকে।
উনার রুমে অবস্থানরত বাকি তিনজন হাউসকিপার হাফিজ এবং টেকনিশিয়ান কামরুল কে মারধর করেন। এ ঘটনার পর হাউসকিপার হাফিজ এবং রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার আখতার কে দ্রুত সিটি মেডিকেলে নেয়া হয়।
ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোনায়েম মুন্না খুলনায় অবস্থানরত কেন্দ্রীয় বিএনপির এক নেতার সাথে যোগাযোগ করেন এবং স্থানীয় যুবদলের কর্মীদের মাধ্যমে হোটেল কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেন। হোটেল কর্তৃপক্ষ তাদের ব্যবসার খাতিরে ব্যাপারটি নিয়ে বাইরে কথা বলতে অপারগতা জানায় এবং হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ দিতে অস্বীকৃতি প্রদান করে। হোটেলের অন্যান্য কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিলে কেন্দ্রীয় যুবদল সভাপতি মোনায়েম মুন্না দ্রুত হোটেল ত্যাগ করে খুলনার অন্য একটি হোটেল সিটি ইন এ অবস্থান করে। সিটি ইন এ অবস্থান শেষে উনি কোন প্রকার চেক আউট না করে ঢাকা চলে যান। সিটি ইন হোটেল কর্তৃপক্ষ তার অবর্তমানে রুমে ঢুকতে অপারগতা প্রকাশ করে।
অবশেষে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর সিটি ইন হোটেল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বিএনপির নেতৃবৃন্দের সাথে যোগাযোগ করে তার রুম খোলেন এবং সেখানে একজোড়া কেডস এবং দুই প্যাকেট মিষ্টি পান।
আমি নিজে হোটেল ক্যাসল সালাম কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছি এবং সত্যতা নিশ্চিত হয়েছি।”