রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি হাটে নিজের লালন-পালন করা একটি গরু বিক্রির উদ্দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন নাটোরের সিংড়া উপজেলার বাসিন্দা রইস উদ্দিন। সেখানেই গত ৫ জুন ১ লাখ ২৩ হাজার টাকা দামে গরুটি বিক্রি করেন তিনি। কিন্তু গরু বিক্রি করতে গিয়েই জালিয়াতির শিকার হন তিনি। রইস উদ্দিনকে টাকার বান্ডেলে জাল নোট ধরিয়ে দিয়ে যান ক্রেতা। সেটা পরে টের পাওয়ার পরেই পশুর হাটে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পশুর হাটে জাল টাকার নোটের বান্ডেল হাতে কান্নারত অবস্থায় সেই বৃদ্ধের একটি ভিডিও ব্যাপক ভাইরাল হয়। এরপর অনেকেই তার দিকে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা অপু বিশ্বাসও। আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন নামের একটি সংগঠনের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ সেই বৃদ্ধের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি।
ইতোমধ্যেই সেই সংগঠনের মাধ্যমে ও বিভিন্ন মানুষের সহযোগীতায় রইস উদ্দিন তার গরু বিক্রির টাকা অনুদান হিসেবে পেয়েছেন। তাই অপু বিশ্বাস আর আর্থিক সহযোগিতা করতে চান না। তবে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেই ব্যক্তির ওমরাহ করার যাবতীয় খরচ তিনি বহন করবেন।
এ বিষয়ে অপু বিশ্বাসের ভাষ্য, ‘ফেসবুকে চাচার ভিডিওটি দেখলাম। যেখানে জানতে পারলাম, তিনি গরু বিক্রি করে জাল নোট পেয়েছেন। ওনারা তো খুব গরীব মানুষ। একটা গরু বিক্রির জন্য দূর-দুরান্ত থেকে আসেন। বিষয়টি আমার চোখে পড়ার পরই তার খোঁজ করতে শুরু করলাম। তখন দেখলাম, একটি সংগঠন তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এবং তারাই আমাকে জানালো, চাচার গরু বিক্রির টাকা ইতোমধ্যেই উঠে গেছে।‘
‘এরপরে সেই সংগঠনের পক্ষ থেকে আমাকে জানানো হলো, চাচার ইচ্ছে তিনি ওমরাহ করতে চান। তাই আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তার ওমরাহ পালনের যাবতীয় খরচ আমি বহন করব। আর সে যদি এই মুহূর্তে ওমরাহ না করতে চান, তাহলে তার হাতে ৫০ হাজার টাকা তুলে দিব। যা দিয়ে তিনি নতুন করে পশু কিনতে পারবেন, বা প্রয়োজনীয় কাজে লাগতে পারবেন।’
অপু বলেন, ‘তিনি আমার বাবার বয়সী। আজকে যদি আমি তার মেয়ে হতাম তাহলে হয়তো এমন কিছুই করতাম। আমি চাই উনি আমার সন্তান-পরিবারের জন্য দোয়া করুক, এতটুকুই।’
এ বিষয়ে রইস উদ্দিন বলেন, “অপু বিশ্বাস আমার মেয়ের মতো। তিনি আমার সাথে কথা বলেছেন এবং ওমরাহ পালনের সব খরচ দেবেন বলেছেন। আমি তার এই ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারবো না।”
মোবাইল: +৮৮০১৭১৭৯৬০০৯৭
ইমেইল: news@dailycomillanews.com
www.dailycomillanews.com