কুমিল্লায় এনআইডি দিয়ে ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু

‘টিকিট যার ভ্রমণ তার’- এ স্লোগানে কুমিল্লা রেলস্টেশনে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) এবং জন্মনিবন্ধন সনদ দেখে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বুধবার (১ মার্চ) সকাল থেকে থেকে আগামী ৫ মার্চের টিকিট বিক্রি শুরু হয় কুমিল্লা রেলস্টেশনে। জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে টিকিট কাটা নিয়ে নানান প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন যাত্রীরা। এনআইডি বা জন্মসনদ না দেখাতে পারায় অনেক ক্রেতাকেই ফিরে যেতে হয়েছে শূন্য হাতে।

কুমিল্লা রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন সনদ যাচাইয়ের মাধ্যমে আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট কাটতে হবে। রেলওয়ে কর্মকর্তারা পয়েন্ট অব সেল (পিওএস) মেশিনের মাধ্যমে টিকিট যাচাই করবেন। কেউ অন্যের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকিট কেটে ভ্রমণ করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর ফলে টিকিট কালোবাজারি বন্ধে জোরালো ভূমিকা রাখবে বলে দাবি করেন রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

কুমিল্লা নগরীর চকবাজার এলাকা থেকে টিকিট কিনতে আসা জয়নাল আবেদীন নামের এক ক্রেতা বলেন এনআইডি থাকায় সহজে টিকিট পেলাম। এতে আগের তুলনায় টিকিট পেতে সহজ হল।

জেলার আদর্শ সদর উপজেলার বাসিন্দা হাসানুজ্জামান বলেন, এনআইডি দিয়ে টিকিট কেনার কার্যক্রমটা ভালো। তবে এনআইডি যাচাই, সার্ভারের ধীরগতির ফলে দীর্ঘ সময় চলে যাচ্ছে টিকিট পেতে। আগে এত বেগ পোহাতে হত না? তবে এ কার্যক্রমটি কালোবাজারি বন্ধ হবে বলে আশা করছি। এনআইডি না থাকায় অনেককেই টিকিট না নিয়ে ফিরে যেতে দেখেছি।

জহির হোসেন নামের এক টিকিট ক্রেতা বলেন, এখন যে সিস্টেম চালু হলো, কালোবাজারিরা নতুন কৌশলে আবার কালোবাজারি শুরু করবেন। তাই কালোবাজারি বন্ধে যেন তারা নতুন কৌশল নিতে না পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের ভূমিকা রাখতে হবে।

আকলিমা হক নামের কুমিল্লা নগরীর বাসিন্দা বলেন, আমি জানতাম না টিকিট কিনতে হলে জাতীয় পরিচয়পত্র লাগবে। লাইনে এসে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর কাউন্টারের কাছে গিয়ে দেখি ভোটার আইডি লাগবে। আমি বাসায় কল করে হোয়াটসঅ্যাপে ছবি এনে তারপর প্রিন্ট করে দেওয়ার পর টিকিট পেয়েছি। এটার আরও প্রচার-প্রচারণা দরকার ছিল।

কুমিল্লা রেলওয়ে থানার ইনচার্জ (আইসি) ইসমাঈল ভূইয়া বলেন, সকাল থেকে প্রচুর মানুষের সমাগম ছিল। টিকিট কেনাকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা রেলস্টেশনে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।

কুমিল্লা রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. মাহাবুব আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সারাদেশের মত কুমিল্লা রেলস্টেশনেও এনআইডি অথবা জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে টিকিট বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এতে যেমন কারে কালোবাজারি বন্ধ হবে, তেমন করে স্মার্ট বাংলাদেশও নির্মিত হবে।

ক্রেতাদের অভিযোগের বিষয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, কর্মকর্তারা এনআইডি যাচাই করে সাবমিট করতে টিকিট প্রসেসিংয়ে কিছুটা সময় লাগে। তাছাড়া এটা সার্ভারে সরাসরি যুক্ত হয়, ফলে সার্ভার অনেকসময় গতি কম দেখায়। যার কারণে কিছুটা সময় বিলম্ব হলেও এটা একটা শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ কার্যক্রমের ফলে আমাদের একাধিক টিম কাজ করবে। কেউ যদি অন্যের এনআইডি বা জন্মসনদ দিয়ে টিকিট কাটে তবে তা আমাদের চেকিংয়ে ধরা পড়বে। ফলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আরো পড়ুন