বায়ু দূষণে ঢাকাকেও টেক্কা দিচ্ছে কুমিল্লা

২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি ‘৬৪ জেলার বায়ুদূষণ সমীক্ষা ২০২১’ উপস্থাপন করে ক্যাপস। ওই সমীক্ষায় দূষিত ৩৪ জেলার তালিকায়ও নাম ছিল না কুমিল্লার। ২০১৯ সালের জুনে পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান মানমাত্রা তদারকি স্টেশনের তথ্যে বলা হয়, দেশের সবচেয়ে কম বায়ুদূষণের জেলা কুমিলল্গা। অথচ ফেব্রুয়ারি মাসে স্বাস্থ্যকর এই নগরীর বাতাস সারা বিশ্বকে টপকে জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে উঠেছে। এ মাসে চার দিনে বিশ্বে দূষিত শহরের তালিকায় কুমিলল্গার নাম এসেছে চারবার।

আইকিউ এয়ারের তথ্যমতে, ৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার আইকিউ স্কোর ছিল ২৬৫ পিপিএম। ৬ ফেব্রুয়ারি ছিল ২৮১ পিপিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ছিল ২৮৯ পিপিএম। গত ২২ ফেব্রুয়ারি তালিকায় ১৬৪ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় রাজধানীর অবস্থান ছিল অষ্টম। আর রাজধানীকে ছাড়িয়ে কুমিল্লায় দূষণমাত্রা বলা হয়েছে ১৭৩। এই মাসের প্রথম ২৭ দিনের মধ্যে ১৯ দিনই কুমিল্লার বায়ুমান ছিল ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’। আট দিন ছিল ‘অস্বাস্থ্যকর’।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) কুমিলল্গা অঞ্চলের সভাপতি মোসলেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ, ট্রাক্টরে করে মাটি-ইট সরবরাহ, উন্মুক্তভাবে ভবন নির্মাণ, সড়কে যেখানে সেখানে মাটি-বালু-ইট-সিমেন্ট ফেলে রাখা, যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা ও ঘনবসতি বেশি হওয়া বায়ুদূষণের তালিকার শীর্ষে নাম থাকার বড় কারণ।

ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, এখন ঢাকার বায়ুদূষণের বড় একটি ক্ষেত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে বর্জ্য পোড়ানো। এটি নগরের বায়ুকে ক্রমান্বয়ে ক্ষতিকর থেকে অতি ক্ষতিকর মাত্রায় নিয়ে যাচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও বায়ুদূষণবিষয়ক গবেষক ড. আবদুস সালাম বলেন, আদালত বিভিন্ন সময় বায়ুদূষণ নিয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকেন। তবে আদালত যখন এসব দিকনির্দেশনা দেন, তখন সরকার বা সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটু তৎপর হয়। কিছু দিন পর আবার ঝিমিয়ে পড়ে। এখানে পরিবেশ অধিদপ্তরের বড় ভূমিকা রাখা দরকার। বায়ুদূষণ এখন এ রাষ্ট্রের বড় সমস্যা।

আরো পড়ুন