কুমিল্লার দেবিদ্বারে খাল দখল করে কার্যালয় নির্মাণ
কুমিল্লার দেবিদ্বারে খাল দখল করে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে কয়েক প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করায় খালটি ক্রমশই ছোট হয়ে আসছে। ফলে যেকোনো সময় পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা।
উপজেলার ফতেহাবাদ ইউপির সুলতানপুর আলিয়া মাদরাসার সামনের খালটির বড় একটা অংশ দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করছেন ওই গ্রামের খালেক সরকারের ছেলে প্রভাবশালী খোরশেদ আলম সেন্টু।
গত সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই স্থায়ীভাবে খালটির পাড় থেকে ভেতরের দিকে প্রায় ১২/১৫ ফুট পর্যন্ত ইটের গাঁথুনি ও পিলার বাসানোর কাজ চলছে। ঢালাই কাজের জন্য পিলারের ওপরে রড বসানো হয়েছে। খালের পাড়ের অংশে মাটিও ভরাট হয়েছে। ওই স্থানে দেয়াল তৈরি করা হয়েছে। এসব স্থাপনা নির্মাণের জন্য খালের দেড় শতাংশ জায়গা দখল করা হয়েছে।
সংবাদকর্মীরা খালে স্থাপনা নির্মাণ করছেন কেন এমন প্রশ্ন করায় তেড়ে আসেন দখলকারী সেন্টু মিয়ার ছোট ভাই বাবুল মিয়া সরকার। তিনি পাল্টা প্রশ্ন করতে থাকেন কে আপনাদের পাঠিয়েছে আগে বলুন। পরে দখলকারী সেন্টু মিয়াকে ফোনে ডেকে আনেন তার ছোট ভাই বাবুল সরকার। পরে সেন্টু মিয়া এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের অর্থ দিয়ে ম্যানেজ করার চেষ্টা করেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, উপজেলার ফতেহাবাদ ইউপির সুলতানপুরের এ খালটি সাবেক চেয়ারম্যান হালিম সরকারের বাড়ি থেকে শুরু হয়ে ফতেহাবাদ বাজার হয়ে এগারোগ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৪/৫ কিলোমিটার দীর্ঘ। এ খালটি প্রায় ৪০/৪৫ বছর আগে এলাকার কৃষকরা সেচের সুবিধার জন্য খনন করেন। বর্তমানে খালটি সেচ কাজের জন্য ব্যবহার না হলেও বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের একমাত্র পথ। বর্তমানে খালটির বিভিন্ন অংশ দখল করে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মাণ করে বিভিন্ন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত খোরশেদ আলম সেন্টু জানান, এই জায়গাটি আবদুর রশিদ নামে এক ব্যক্তির রেকর্ডের জায়গা। এখানে দলীয় কার্যালয় করা হবে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুস সালাম জানান, এখানে একটি দলীয় পার্টি অফিস করা হবে। তবে এ খালটি রেকর্ডের খাল।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সাহিদা আক্তার জানান, কিছুদিনের মধ্যে কুমিল্লা ডিসির কার্যালয় থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। সুলতানপুর খালে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারীকে গত ২৫ মার্চ উপজেলা ভূমি অফিসের কার্যালয় থেকে স্বাক্ষরিত একটি নোটিশের মাধ্যমে সর্তক করা হয়েছে।
এছাড়াও ফতেহাবাদ ইউপির ওই অংশে অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের মামলা রুজু করা হয়েছে। ওইগুলোর সঙ্গে এটিও উচ্ছেদ করা হবে।
সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ