কুমিল্লায় করোনা উপসর্গ নিয়ে ছোট ভাইয়ের ৫ দিন পর বড় ভাইয়ের মৃত্যু
কুমিল্লার লাকসামে মোঃ আবুল বাশার ওরপে বাদশা মিয়া (৪৮) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পাঁচ দিন পর তার আপন বড় ভাই আবদুল হাকিম (৬৫) মৃত্যুবরণ করেছেন। দুই সহোদর করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ায় এলাকাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে আবদুল হাকিমের মরদেহ দাফন করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (৬ জুন) বেলা ১১টার দিকে লাকসাম পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের দক্ষিণ বিনই গ্রামের মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে আবুল বাশার ওরপে বাদশা মিয়া জ্বর, কাশি, গলাব্যাথা ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মারা যাওয়ার পূর্বে গত বৃহস্পতিবার (৪ জুন) তার নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হলেও ল্যাবের ত্রুটিজনিত কারণে এখনো রিপোর্ট আসেনি।
এরই মধ্যে গত কয়েকদিন থেকে বাদশা মিয়ার বড় ভাই আবদুল হাকিম করোনা উপসর্গ জ্বর, কাশি, শরীর ব্যাথায় ভূগলে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেন। গতকাল বুধবার (১০ জুন) তিনি পৌরসভায় গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক স্থানীয় একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫:৩০ ঘটিকায় তিনি শ্বাসকষ্টে নিজ বাড়িতে মারা যান।
এলাকার কোন লোক ওই বৃদ্ধের লাশ দাফনের জন্য রাজি না হওয়ায় মৃত ব্যক্তির আত্মীয়-স্বজন নিরুপায় হয়ে ইসলামী আন্দোলনের টিমকে জানালে আলহাজ সেলিম মাহমুদ ও ডা. আবদুল মমিন মজুমদারের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট টিম মৃতের গোসল, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের করোনা র্যাপড রেসপন্স টিম দাফনের পূর্বে ওই বৃদ্ধের নমুনা সংগ্রহ করেন। এসময় স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর ওমর আলী, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী, মেডিকেল অফিসার ডা. মো. আবদুল মতিন উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে, করোনা উপসর্গ নিয়ে দক্ষিণ বিনই গ্রামের দুই সহোদর মারা গেলেও গত কয়েকদিন থেকে তাদের পরিবারের কেউ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলেননি বলে জানা গেছে। এতে এলাকাজুড়ে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এলাকাবাসীর নিরাপত্তার স্বার্থে আজ তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
লাকসাম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আবদুল আলী করোনা উপসর্গ নিয়ে আবদুল হাকিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসলে করোনা ছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।