করোনা জয়ী এক পুলিশ সার্জেন্টের গল্প
ঢাকা শহরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ডিএমপির পুলিশ সার্জেন্ট সাইফুল ইসলাম।নিজের মনোবলকে দৃঢ় রেখে করোনাকে হারিয়ে ফিরে এসেছেন তিনি।
২০১৭ সালে ডিএমপিতে যুক্ত হওয়া সার্জেন্ট সাইফুল ইসলাম করোনায় আক্রান্ত হয়ে এক ব্যতিক্রমী অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন ডেইলি কুমিল্লা নিউজের কাছে। তিনি জানান, ‘মূলত আমি ২২ তারিখ থেকে করোনায় আক্রান্ত ছিলাম। কিন্তু সবসময় নিজের মনকে বলতাম আমি আক্রান্ত না। তখন আমার শ্বাসকষ্ট ছাড়া করোনার প্রায় সকল উপসর্গ দেখা দিয়েছিলো তবু আমি মনোবল হারাইনি। হঠাৎ করে ইফতারের পর আমার শরীরের তাপমাত্রা ১০৩ থেকে ১০৪ডিগ্রী হয়ে যায়। আমি নিজেই অবাক হয়ে যাই এতো তাপমাত্রা দেখে। তখন পরিচিত একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে কিছু মেডিসিন নেই। এরপর ২৪ তারিখে আমার অবস্থা অনেক খারাপ হওয়াতে আমি কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে রাজারবাগ যায় টেস্ট করাতে। কিন্তু যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে টেস্ট করাতে পারিনি। ২৫ তারিখেও ঈদের দিন থাকায় টেস্ট করাতে পারিনি। ২৬ তারিখ নমুনা দেয়ার পর ২৭ তারিখ থেকে তুলনামূলক সুস্থতা অনুভব করি।তারপর ২৮ তারিখ রাতে ফোন আসলো আপনার করোনা পজিটিভ! এই পজিটিভ শব্দটা শুনার পর তাৎক্ষণিক আমার শরীরে কিছু পরিবর্তন দেখা দেয়। শরীর ঘামতে শুরু করে, পায়ের নিচ থেকে মনে হচ্ছে মাটি সরে যাচ্ছে। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এরপর ডাক্তারের সাথে কথা বলে উনাদের কথামতো বাসায় থেকেই ঘরোয়া প্রদ্ধতিতে চিকিৎসা নেই। যার ফলশ্রুতিতে ২৯ তারিখ থেকে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।’
করোনার কারণে কি কি সমস্যা দেখা দিয়েছিলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, ২২ তারিখ থেকে প্রচুর শরীর ব্যথা ছিলো, খাবারের স্বাদ বুঝতে পেতাম না, ঘুম কম হতো, ফুসফুসে ইনফেকশনের কারনে নিউমোনিয়া হয়ে যায়।
এইসময় তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে একা কাটানো ২০ দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, কোনদিন পরিবার ছাড়া ঈদ করিনি কিন্তু এইবছর করোনার কারনে একা ঈদ করতে হয়েছে। ঈদের দিন প্রচন্ড জ্বর নিয়ে রান্না করতে গিয়ে হাত পুড়ে যায়। আল্লাহর অশেষ রহমতে ডাক্তারদের পরামর্শ মোতাবেক কাজ করায় ১৫ইজুন আমার করোনা নেগেটিভ আসে। এর পর ১৬ তারিখ আবার টেস্ট করালে একইভাবে দ্বিতীয় টেস্ট ও নেগেটিভ আসে।বর্তমানে তিনি মোটামুটি সুস্থ আছেন বলে জানান।তবে এখনও উনার শরীর প্রচুর দুর্বল মনে হয়।
অসুস্থতার সময় সার্বক্ষণিক খবর রাখায় পুলিশ হাসপাতালের ডাক্তার,পুলিশ বিভাগ ও প্রশাসনের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। পাশাপাশি সবাইকে করোনায় আতঙ্কিত না হয়ে সচেতন হবার পরার্মশ দেন তিনি। সেই সাথে কেউ যেন অযথা বাহিরে না বের হয়। যদি খুব প্রয়োজন হয় তাহলে অব্যশই মাস্ক পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে যাতে বের হয়।