কুমিল্লার দেবিদ্বারে অসামাজিক কাজ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই স্ত্রীকে হত্যা
তাছলিমা আক্তার ও তার দ্বিতীয় স্বামী রবিউল কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কাজ করতেন। সেই টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরেই তাছলিমাকে হত্যা করেন রবিউল। এরপর স্ত্রীকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে একটি জিডিও করেন তিনি। পরে গা ঢাকা দেন।
শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে পুলিশ। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাতে কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌরসভার গোমতী আবাসিক এলাকার ‘পুষ্পকুঞ্জ’ নামে একটি ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট থেকে তাছলিমা আক্তারের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত তাছলিমা আক্তার মুরাদনগর উপজেলার নোয়াগাঁওয়ের মো. হোসেন মিয়ার মেয়ে। তাছলিমার স্বামী মো. রবিউল ইসলাম দেবিদ্বার উপজেলার ওয়াহেদপুরের শাহ আলম মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজি চালক।
দেবিদ্বার থানার ওসি মো. আরিফুর রহমান জানান, শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লায় পাঠানো হয়েছে। নিহতের মোবাইলের কল লিস্টের সূত্র ধরে রবিউল ইসলাম ও তার সহযোগী সুমনকে আটক করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, চলতি মাসের ১৮ তারিখ স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে দেবিদ্বার পৌরসভার গোমতী আবাসিক এলাকার ‘পুষ্পকুঞ্জ’ ভবনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাট ভাড়া নেন তাছলিমা-রবিউল। ওই সময় বাড়ির মালিক শাহ জালাল জাতীয় পরিচয়পত্র চাওয়ায় রবিউল বলেন পরে ফটোকপি করে এনে দেবেন। ২০ এপ্রিল আবারো এনআইডি কার্ডের ফটোকপি চাওয়ায় রবিউল বিকেলে দেবেন বলে জানান। ওই রাত থেকেই তাদের ফ্ল্যাট তালাবদ্ধ দেখতে পান বাড়ির মালিক।
নিহত তাছলিমার ছোট ভাই প্রবাস ফেরত সজিব জানান, প্রথমে মুরাদনগরের থোল্লা গ্রামের সাগর নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে তার বোনের বিয়ে হয়েছিলো। ওই সংসারে তার দুটি ছেলে রয়েছে। তিন বছর আগে প্রেম করে রবিউলকে বিয়ে করেন তাছলিমা। এ সংসারে তার ছয় মাসের একটি ছেলে রয়েছে।
সজিব আরো জানান, ২০ এপ্রিল রবিউল শ্বশুর বাড়িতে কল করে জানান- তাছলিমাকে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পরে পরিবারের সদস্যরাও অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেন। ২৭ এপ্রিল মুরাদনগর থানায় জিডি করেন রবিউল। এমনকি দেবিদ্বারে বাসা ভাড়া নেয়ার কথাও কাউকে জানাননি রবিউল-তাছলিমা। পরিবারের সদস্যদের ধারণা- নতুন ভাড়া করা বাসায় তাছলিমাকে হত্যা করে আত্মগোপন করেন রবিউল।
এদিকে পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, তাছলিমা ও রবিউল বিভিন্ন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে অসামাজিক কার্যকলাপ চালাচ্ছিলেন। ওই রাতে অসামাজিক কাজের টাকার ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে স্ত্রীকে হত্যা করতে পারেন রবিউল।
দেবিদ্বার সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমিরুল্লাহ বলেন, মুরাদনগরের নোয়াগাঁওয়ে শ্বশুর বাড়ি থেকে শুক্রবার ভোরে রবিউলকে আটক করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরো মিথ্যা তথ্য দিয়ে পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। তাকে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করা আলামত পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
সূত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ