কুমিল্লায় কুকুরের কামড়ে শিশুসহ আহত ২৪
কুমিল্লার হোমনায় দুদিনে পাগলা কুকুরের কামড়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ অন্তত ২৪ জন আহত হয়েছেন। এ নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। মঙ্গলবার (৮ জুন) দুপুরে একটি কুকুরকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছেন ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী।
আহতরা হলেন- ফজুরকান্দি গ্রামের তাসফিয়া (৪), আবদুর রহমান (৫), হোসাইন (৬), শারমিন আক্তার (২৬), রাহিমা (৬), সামিয়া (১৮), আতিক (১২), ছোট ঘারমোড়া গ্রামের রুশিয়া বেগম (৫০), জিসান (৭), খাদিজা (১৪), শাহনাজ (৩০), শাওন (১২), সেলিম (২৬), মিরাজ (২৮), মারিয়া (৬), লিটন (৪০), শ্রীপুর গ্রামের রাফী (৮), শ্যামপুর গ্রামের শাওন (১২), খোদে দাউদপুর গ্রামের মাসুদা আক্তার (২৮), নিলখী গ্রামের হাজী মনোয়ারা বেগম (৫৫), ফজিলত বেগম (৬০), আনোয়ারা বেগম (৬০), ফয়েজ উদ্দিন (৬৫) ও মামুন (৩২)। উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন (প্রতিষেধক) সরবরাহ না থাকায় আহতদের ভোগান্তি পোহাতে হয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গত কয়েক দিন ধরে হোমনায় কুকুরের উপদ্রবে আতঙ্ক বেড়েছে। গ্রামের অলিগলিতে দিনের বেলায় দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় কুকুরের দল। সোমবার থেকে মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ফজুরকান্দি, ঘারমোড়া, শ্যমপুর, শ্রীপুর, খোদে দাউদপুর ও নিলখী গ্রামসহ মোট ছয় গ্রামের অন্তত ২৪ জন নারী, পুরুষ ও শিশুকে কামড়ে আহত করেছে। এ ঘটনায় মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে মঙ্গলবার (৮ জুন) সকালে নিলখী গ্রামে একটি কুকুরকে পিটিয়ে হত্যা করেন।
আহত মোর্শেদুল ইসলাম সাজু বলেন, ‘আমি ঘাড়মোড়া বাজারে রাস্তার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি। হঠাৎ একটি কুকুর আমার হাঁটুর ওপর কামড় দেয়। আমি কুকুরটিকে লাথি মেরে তাড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে আমার বুকের মধ্যে আরও একটি কামড় বসিয়ে দেয়। পরে আশপাশের লোকজন আমাকে হাসপাতাল নিয়ে যায়। সরকারি হাসপাতালে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় আমাদের আরও বেশি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।’
কুকুরের কামড়ে আহত শিশু রাফির মা খাদিজা আক্তার জানান, হঠাৎ করে একটি কুকুর বাড়ির উঠানে এসে রাফির পিঠে ও হাতসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে কামড়াতে থাকে। পরে বাড়ির লোকজন লাঠি নিয়ে তাড়া করলে কুকুরটি পালিয়ে যায়। তাকে দ্রুত উদ্ধার করে উপজেলা সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় উপজেলা সদরের ফার্মেসিগুলোতে খোঁজ করে পাওয়া যায়নি। পরে দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে সংগ্রহ করে প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন, ‘হঠাৎ করে কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। দুদিনে কুকুরের কামড়ে আহত ২৪ জন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিষেধক না থাকায় বাইরে থেকে সংগ্রহ করে এদের প্রথম ডোজ দেয়া হয়েছে।’
জেলা সিভিল সার্জন মীর মোবারক হোসাইন বলেন, ‘উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হয় না। এটি কেবল কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে দেয়া হয়। তবে হোমনার বিষয়ে আমরা অবগত আছি। আহতরা যেহেতু ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রথম ডোজ নিয়েছেন পরবর্তীর ডোজগুলো হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাধ্যমে তাদের দেয়া হবে।’