কুমিল্লায় বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই
করোনার ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণেও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো। রোগী ও স্বজনদের প্রবেশের সময় শরীরে দেয়া হচ্ছেনা জীবাণুনাশক। গুটিকয়েক হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করা হলেও সেখানে নেই সাবান। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব।
জেলা সিভিল সার্জন অফিসের পক্ষ থেকে বার বার সতর্ক করা হলেও করোনা সচেতনতায় কোনো প্রকার স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না তারা।
সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার (কুমিল্লা টাওয়ার), সিডিপ্যাথ, গোমতী ও মুন হাসপাতালসহ কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিন দেখা গেছে, কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে ব্যবস্থাপত্র নিতে এসেছেন শতাধিক রোগী। সঙ্গে রয়েছে স্বজনরাও। এদের কেউ মানছেন না সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব। একে আপরের শরীর ঘেঁষে বসে বা দাঁড়িয়ে আছেন চিকিৎসকের অপেক্ষায়। এদের অনেকেরই মুখে নেই মাস্ক। যাদের রয়েছে তাদের অধিকাংশকেই আবার সঠিক নিয়মে পড়তে দেখা যায়নি। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে বহির্বিভাগে আসা রোগীদের অসচেতনতায় সামাজিক বা শারীরিক দূরত্ব কার্যকর করা সম্ভব হচ্ছে না।
নাঙ্গলকোট থেকে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তার দেখাতে আসেন রোজিনা বেগম নামের এক নারী। জাগো নিউজকে তিনি বলেন, গ্যাস্টোলিভার ডাক্তার দেখাতে এসেছি। হাসপাতালে স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো প্রকার ব্যবস্থা না থাকায় উল্টো স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছি। তবে সচেতন এ রোগী শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হাসপাতাল করিডোরের এক কোনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।
কথা হয় আবুল কাশেম নামের রোগীর এক স্বজনের সঙ্গে। তিনি মাকে মেডিসিন ডাক্তার দেখাতে নিয়ে এসেছেন কুমিল্লার বাদুরতলা সিডিপ্যাথ হাসপাতালে। ডাক্তারের অপেক্ষায় বসে আছেন জটলার মধ্যে। হাসপাতালে প্রবেশের পর থেকে জীবাণুনাশক বা স্বাস্থ্য সুরক্ষার কোনো ব্যবস্থাই চোখে পড়ে নি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ বিষয়ে কুমিল্লা মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বহির্বিভাগে আসা রোগীদের অসচেতনতায় শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা যাচ্ছেন। রোগীর ছাপ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তিনি।
ডাক্তার দেখাতে মুন হাসপাতালে আসেন নগরীর দক্ষিণ চর্থার বাসিন্দা জিল্লুর রহমান। শারীরিক দূরত্ব এবং পর্যাপ্ত স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা না দেখে ডাক্তার না দেখিয়ে তাকে বাসায় ফিরে যেতে দেখা গেছে।
এ বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জন মোবারক হোসেন জাগো বলেন, বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। তাদের প্রতি নির্দেশনা ছিল হাসপাতালে স্বাস্থ্য সুরক্ষার ব্যবস্থা করা। যারা করোনার ঊর্ধ্বমুখী এ সময়ে অবহেলা করবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. কামরুল হাসান বলেন, এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে হাসপাতালগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।