ছাত্ররাজনীতি ফিরবে জানলে বুয়েটে ভর্তি হতাম না: আবরার ফাহাদের ভাই
আমার সুযোগ ছিল, আমি বাইরে চলে যেতে পারতাম। কিন্তু রাজনীতি নেই দেখে আমি বুয়েটে ভর্তি হয়েছি। ক্যাম্পাসে আবারও ছাত্ররাজনীতি ফিরবে জানলে বুয়েটে ভর্তি হতাম না।
এভাবেই আক্ষেপের সুরে বিবিসি বাংলাকে কথাগুলো বলছিলেন ছাত্রলীগের হাতে নিহত আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ। গত সোমবার (১ এপ্রিল) আদালতের এক রায়ে বুয়েটে পুনরায় ছাত্ররাজনীতি চালু করার সুযোগ তৈরি হয়।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এরপরই ছাত্রদের তীব্র আন্দোলন ও দাবির প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ হয় ছাত্ররাজনীতি।
তখন আবরার ফাহাদের ভাই আবরার ফাইয়াজ মাধ্যমিকের ছাত্র। ভাইয়ের হত্যার তিন বছর পর ফাইয়াজ যখন বুয়েটে ভর্তি হন, তখন সেখানে ছাত্ররাজনীতি পুরোপুরি নিষিদ্ধ। সোমবার (১ এপ্রিল) ছাত্ররাজনীতি চালুর বিষয়ে আদালতের রায়ের পর আবরার ফাইয়াজ ও তার পরিবার উদ্বেগের কথা জানান বিবিসি বাংলাকে।
ফাইয়াজ বলেন, বুয়েটে আবার রাজনীতি ফিরে আসলে তা হবে আবরার ফাহাদকে দ্বিতীয়বার হত্যার শামিল। এতো কিছুর পরও যদি রাজনীতি ব্যাক করে, তাহলে পরে কাউকে মারলেও কোনো প্রতিবাদ হবে না।
২০১৯ সালে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ, একটি রিট আবেদনের পর সোমবার সেটি স্থগিত করে হাইকোর্ট। এরপর মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) থেকে বুয়েটে ছাত্ররাজনীতি ফিরিয়ে আনার ঘোষণা দেয় ছাত্রলীগ। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বুয়েটে তাদের নতুন রাজনীতি হবে সেশনজট, র্যাগিং-বুলিং, দখল-বাণিজ্য ও হত্যা-সন্ত্রাস বিরোধী রাজনীতি।
তবে বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের বাইরে অন্য কোনো ইস্যুতে মতামত দিতে চান না বলে জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক কৌশল বিভাগের চূড়ান্ত বর্ষের এক শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পাঁচ বছর আগে রাজনৈতিক পরিবেশে ভয়ের জায়গা ছিল বুয়েট। রাজনীতি বন্ধ হওয়ায় আমরা একটা নিরাপদ ক্যাম্পাস পেয়েছিলাম। আমরা সেই পরিবেশটাই বজায় রাখতে চাচ্ছি।
এদিকে শিক্ষার্থীরা বলছেন, বুয়েটে রাজনীতি ফিরলে তারা আর ক্লাস পরীক্ষায় ফিরবেন না। বুয়েটের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ইতোমধ্যে একাত্মতা জানিয়ে সরব হয়ে উঠেছেন সাবেক শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।