কুমিল্লায় ছেলের এলোপাতাড়ি কিলঘুষিতে প্রাণ গেলো মায়ের!
কুমিল্লায় ছেলের হাতে মা খুনের অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৯ জুন) রাতে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার সাতানি ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বুধবার সকালে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
নিহত মঞ্জুরা বেগম (৬৫) কুমিল্লা তিতাস উপজেলার সাতানি ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর গ্রামের শান্তি মিয়ার স্ত্রী। পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার ছেলে নবীর হোসেনের বিরুদ্ধে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শান্তি মিয়ার দুই ছেলে তিন মেয়ে। ছোট ছেলে প্রবাসী বাবুল মিয়া বাহরাইনে থাকে। আর বড় ছেলে নবীর হোসেন একটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। শান্তি মিয়ার বয়স হয়েছে তাই বাড়িতে বেকার। সাংসারিক খরচের জন্য তাকিয়ে থাকেন দুই ছেলের দিকে। ছোট ছেলে প্রবাস থেকে মাস শেষে টাকা পাঠালেও বড় ছেলে খুব একটা সংসার খরচ দেন না। এতে কয়েকদিন পরপরই ঘরে বড় ছেলে নবীর হোসেনের সঙ্গে তার বাবা-মায়ের ঝগড়া বাধে।
এর আগেও কয়েকবার সাংসারিক খরচ নিয়ে নবীর হোসেনের সঙ্গে তার মায়ের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে স্থানীয়রা বসে সমস্যার সমাধান করে। মঙ্গলবার রাতে সংসারের খরচ চাওয়ায় নবীর হোসেন তার মাকে গালিগালাজ করেন। শুরু হয় বাগবিতণ্ডা। একপর্যায়ে চেয়ার দিয়ে মাকে মারধর করতে শুরু করেন। এ সময় তার বাবা শান্তি মিয়া বাধা দিলে তাকেও ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়ে মা মঞ্জুরা বেগমকে এলোপাতাড়ি কিল ঘুষি মারতে থাকেন। মা মাটিতে লুটে পড়লে স্থানীয়রা উদ্ধার করে তিতাস উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাতেই ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে সকালে পুলিশ মঞ্জুরার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
সাতানী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. শামসুল হক সরকার বলেন, রাতে ঘটনাটি ঘটেছে। তখনই শুনেছি। ওই ছেলে ঝগড়ার একপর্যায়ে তার মাকে লাথি দেয় এবং আঘাত করে। এতে তিনি মারা যায়। ওই ঘটনায় ছেলে পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে বলে জানতে পেরেছি।
এই বিষয়ে কুমিল্লা তিতাস থানার ওসি কৃষ্ণ কান্তি দাস বলেন, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। নিহতের শরীরে তেমন আঘাতের চিহ্ন পাইনি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মূল ঘটনা জানা যাবে। আমরা এই বিষয়ে তদন্ত করে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।